তিস্তা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে বালু উত্তোলন, ব্লক পিসিং ধসে বসতভিটা নদী গর্ভে
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম শনিবার রাত ০১:৪৭, ২৩ জুলাই, ২০২২
কুড়িগ্রামের উলিপুরে কিছুটা পানি বেড়েছে তিস্তা অববাহিকায়। বাঁধের তীর ঘেঁষে বলগেট নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন ও পানির তীব্র স্রোতে, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের ঠুটাপাইকর এলাকায় তিস্তা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ব্লক-পিসিং ধসে গেছে।
নদীর তীরবর্তী বাঁধ ঘেঁষা আব্দুর রহমান, রওশন আরা বেগম ও শুকলাল রবিদাসসহ চার জনের বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের কবলে রয়েছে বাঁধসহ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, আশ্রয় কেন্দ্র ও শতাধিক ঘর-বাড়ী।
জানা গেছে, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের ঠুটাপাইকর এলাকায় তিস্তা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার ব্লক-পিসিং ধসে যায়। খবর পেয়ে গত বুধবার ২০ জুলাই সকাল থেকে ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করছেন। গত তিন দিনে প্রায় ২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখনও ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলানো কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে পানির তীব্র স্রোতে ব্লক পিসিংয়ের প্রায় ৬০ মিটার ধসে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠুটাপাইকর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর জামে মসজিদ, আশ্রয়ণ কেন্দ্রসহ ঘর-বাড়ী ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভাঙন কবলিত আব্দুর রহমান, রওশন আরা বেগম ও শুকলাল রবিদাস জানান, আমাদের ঘর-বাড়ীর অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। এখন আতঙ্কে দিন-রাত পার করছি; কখন যেন মাথা গোঁজার ঠাই বাকী জায়গাটুকু নদীতে চলে যায়। বাঁধ রক্ষার জন্য ভালোভাবে পদক্ষেপ না নিলে এই এলাকার ঘর-বাড়ীসহ স্কুল, মসজিদ রক্ষা হবে না।
বলগেট নৌকা দিয়ে বালু ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, ব্লক পিসিং এর কাছে নয় কমপক্ষে ৭০০ মিটার দূর থেকে বালু তোলা হয়েছে। বালু বিক্রির জন্য না, মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য বালু তোলা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ব্লক পিসিং রক্ষায় আপদকালীন প্রকল্পের মাধ্যমে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, খবর পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। সেসময় বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল বলে আমাকে জানানো হয়।