ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার
মোঃ কামরুজ্জামান রবিবার রাত ০৯:৪৭, ১০ মে, ২০২০
একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর), প্রতিনিধি: স্বাধীনতার পর দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তারা বাঁশের ভাঙ্গা সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে। সম্প্রতি ভাঙ্গা সাঁকো থেকে পড়ে মারা গেছে ২য় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার প্রতিপাল গ্রামের বুড়াইল নদীর উপর জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকোটি এখন গ্রামের মানুষের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও নির্মাণ হয়নি স্বপ্নের সেতু। জানা গেছে, উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-পরাণ সড়ক বুড়াইল নদীর উপর স্বাধীনতার পর কোন সেতু নির্মাণ করা হয়নি। গ্রামবাসি চাঁদা তুলে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করতো। এর আশেপাশে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হলেও ওই স্থানে সেতু তৈরিতে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। গত এক বছর থেকে বাঁশের সাাঁকোটি ভেঙ্গে গেলে আর মেরামত করা হয়নি। মাঝে দু’টি লম্বা বাঁশ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। সম্প্রতি প্রতিপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র একই গ্রামের ছফি মিয়া ছেলে মারুফ মিয়া (৮) ওই সাঁকো পারপারের সময় পা ফসকে পড়ে গিয়ে মারা যান। পরে এলাকাবাসী তার লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে। এছাড়াও ওই সাঁকো দিয়ে পরাণ, ব্রাহ্মণীকুন্ডা, পশ্চিমদেবু, শালমারা, আদম, পাওটানা, কামারপাড়াসহ ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করছে। সাঁকোতে কেউ উঠলেই দুলতে থাকে। এলাকাবাসী নুর আলম, আব্দুল করিম, আবুল হোসেন বলেন, সাঁকো দিয়ে চলাচল করা কষ্টসাধ্য। এখানে কৃষি পণ্য রোপন-উৎপাদন ও ফসল পরিবহনে আমাদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ৯০ বছরের বৃদ্ধা আব্দুস সোবাহান বলেন, আমরা বুঝমান হওয়ার পর থেকে এ অবস্থা। বেশ কয়েক বার মাপযোগ করা হলেও সেতু হয়নি। প্রতিপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেরামত আলী বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে সাঁকোটি। শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। তাই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে না পেরে অনেকেই পড়া লেখা ছেড়ে দিয়েছে। সম্প্রতি মারুফ নামে এক শিক্ষার্থী মারাও গেছে। তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রওশন জমির রবু সরদার বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মানের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য টিপু মুনশি ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য কাগজপত্র ঠিক করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।