ঢাকা (সকাল ৮:৫৬) শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুদের উপস্থিতিতে মা-বাবার বিয়ে

এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন Clock শনিবার সকাল ১১:৫৬, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যে ঘটা বিবাহ বিচ্ছেদের জেরে করা যৌতুক মামলায় আদালতে দুই শিশুর সামনেই তাদের মা-বাবার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এই ঘটনা ঘটে।

 

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম ও আশা খাতুনের বিয়ে হয় পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে। পরে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে দুই সন্তান। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে চার মাস আগে আমিনুল ও আশার সংসার ভেঙে যায়। কার্যকর হয়েছে তালাকও। পরে স্বামী আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌতুকের একটি মামলাও করেছিলেন স্ত্রী আশা খাতুন।

বৃহস্পতিবার ছিলো সেই মামলায় হাজিরার দিন। এ সময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে সেই মামলার শুনানি চলাকালে তাদের দুই শিশু সন্তানের দিকে চোখ আটকে যায় বিচারকের। এ সময় বিচারক লক্ষ্য করেন, সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মামলার বাদী মা আশার কোলে এক শিশু, অন্যজন কাঠগড়ায় দাঁড়ানো। এই অবস্থায় আদালতের পক্ষ থেকে বিচারক হুমায়ুন দুই শিশুর ভবিষ্যতের বিষয়টি চিন্তা করে বাদী ও আসামিপক্ষকে আপসের পরামর্শ দেয়।পরে আমিনুল ও আশা তাদের ভুল বুঝতে পেরে আপস করতে চাইলে দুই পক্ষের সম্মতিতে আইনজীবীদের অনুরোধে বাসানো হয় বিয়ের আসর। বিচারকাজ শেষে বিচারকের খাস কামরায় উভয়পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে কাজীর মাধ্যমে আদালতেই বিয়ে পড়ানো হয় ওই দুই শিশুর বাবা ও মায়ের। পরে এক লক্ষ চার হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক পুনরায় আমিনুল ও আশার বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল আওয়াল বলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই আদালতে যোগ দেয়ার পর থেকে মানবিক বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আদালত কক্ষে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংসারের ভাঙন ঠেকানো গেল। এতে দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হলো।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতের আইনজীবী রাসেল আহমেদ রনি বলেন, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবীরের আদালতে আমার অনেক মামলা পরিচালনার সৌভাগ্য হয়েছে। সাধারণ বিচারপ্রার্থী ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে বছরের পর বছর ঘুরলেও তার আদালত ব্যতিক্রম। তিনি খুব সহজেই মামলার প্রকৃত ঘটনা বের করে ফেলেন। তার আদালতে মিথ্যা মামলা করার জন্য বাদিকেও হাজতে যেতে দেখেছি। আর তাই  বৃহস্পতিবারের ঘটনায় শুধু একটি পরিবার নয়, দুই শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হল। এটা প্রশংসার দাবি রাখে।

তবে মানবিক বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, মেয়েটা সংসার করতে চাইলে দুই পক্ষের আইনজীবীসহ দুই জনকে নিয়ে আলাদাভাবে বসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করি। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় তারা এক হবার সিদ্ধান্ত নিলে সংসার করতে রাজি হলে কাজি ডেকে তাদের বিয়ে দেয়া হয়েছে শিশু দুটির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT