গৌরীপুরে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হারুন দিবস পালিত
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ বুধবার সন্ধ্যা ০৬:৫৬, ২৭ জানুয়ারী, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ২৭ জানুয়ারী (বুধবার) আলোচনা সভা, পুষ্পমাল্য অর্পন ও দোয়া মাহফিল মধ্য দিয়ে শহীদ হারুন দিবস পালিত হয়। স্থানীয় হারুন পার্কে শহীদ হারুন বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আঙ্গিনায় শহীদ হারুন স্মৃতি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপত্বিতে ও সাধারণ সম্পাদক আঃ হাইয়ের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বীর মক্তিযোদ্ধা এডভোকেট নাজিম উদ্দীন আহমেদ এমপি, ময়মনসিংহের জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক ভিপি কাজিম উদ্দিন, গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবি, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ম. নুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম ডলি, হারুন স্মৃতি সংসদের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, মোঃ নজরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবুল হাসিম, শহীদ হারুন স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযুদ্ধা ভিপি ফজলুল হকের সন্তান রাজিবুল হক প্রমুখ। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা ছায়েদুল হক।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা আন্দোলনের সময় ঢাকা নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমান পুলিশের গুলিতে শহীদ হলে সারাদেশে ছাত্র আন্দোলনের নতুন মাত্রা তুঙ্গে উঠে। আর এই বিক্ষোভের জের ধরেই ২৭ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১১টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর শহরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তৎকালীন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ফজলুল হকের নেতৃত্বে গৌরীপুর কলেজ থেকে ছাত্ররা একটি বিশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের মধ্যবাজার ধানমহালের কাছে আসা মাত্রই তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম, এ সামাদের নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের মিছিলের উপর দাঙ্গা পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। ওই সময় মিছিলের অগ্রভাগে থাকা পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ছাত্রনেতা গৌরীপুর কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আজিজুল হক হারুন।
শহীদ হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ছামারুল্লাহ্ গ্রামের মৃত মিয়া বক্স ও মাতা খাতুন্নেছার পুত্র। শহীদ হারুনরা ছিলেন ৬ ভাই ও ৩ বোন। তার মাঝে দুই ভাই ও এক বোন বেঁচে আছেন। নান্দাইল-আঠারবাড়ি সড়কের পাশেই ৬৯’র গণ-আন্দেলনে শহীদ আব্দুল আজিজ হারুন চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। তার জরাজীর্ণ কবরটি এলাকার লোকজনের সহায়তায় কিছু ইট দিয়ে বেষ্টনী করে টাইলস করে রাখা হলেও এখন আর কেউ এর খোঁজ রাখে না।