কাগজের ফুল বিক্রি করে চলে ফেরিওয়ালা গৌতম মালাকা’র সংসার
মোঃ কামরুজ্জামান শনিবার রাত ০৯:০৬, ১১ জুলাই, ২০২০
নাজমুল হোসেন, (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: কাগজের চরকি দারুণ এক খেলনা। এটা বাতাসের দিকে ধরলেই ঘুরতে থাকে। যন্ত্র ছাড়া কোনো কিছু ভনভন করে ঘুরবে, ভাবা যায়! ফুলকে ভালবাসে না এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। ফুল ভালবাসার প্রতীক। তাই প্রকৃতি ও ফুল প্রতিটা মানুষকে কাছে টানে। সে কারণে প্রতিটি মানুষ প্রকৃতি ও ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসে। প্রকৃতি ও সৌন্দর্য পিপাসু প্রতিটি মানুষ তাদের বাড়ির আঙিনা বা ছাদে ফুল চাষ করে থাকেন। কেউ বা আবার ফুলের গাছ টবে লাগিয়ে বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় রাখেন। আর শিশুদের খেলনা কিংবা ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ঘরে রাখেন কৃত্রিম ফুল। তাছাড়া বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাগজের ফুলের কদরতো রয়েছেই। কাগজের এই ফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এই কাগজের ফুল তৈরি ও বিক্রি অনেকের জীবিকাও। অনেকের সংসারই চলে এই ফুল বিক্রিতে। কাগজের চরকি ও প্লাস্টিকের মনকাড়া কৃত্রিম ফুল তৈরি ও বিক্রি করে প্রায় ৮- ১০ বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের বাজার ভদ্রঘাট পাড়া গ্রামের গৌতম মালাকা(৩৫)। গৌতম মালাকা প্রতিদিন ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাট-বাজার,পাড়া-মহল্লার অলিতে গলিতে পথে পথে ঘুরে রঙ্গিন কাগজের ফুল ও প্লাস্টিকের ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সারাদিন কাঠফাটা রোদ কিংবা বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফুল বিক্রি করেন। নিজ হাতে তৈরী কাগজের ফুল বিক্রি করাই তো তার অন্ন জোগানোর একমাত্র উৎস। ‘ফুল নেবে ফুল’, ‘লাল-নীল রঙ্গিন কাগজের ফুল’- গ্রামের পথে পথে কাগজের ফুল বিক্রেতার হাঁক শুনলেই গ্রামের ছোট বড় সকলেই ছুটে আসেন ফুল নিতে।শুক্রবার ১০ জুলাই সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মালশাপাড়া মোল্লাবাড়ী এলাকার ক্রসবার-৩ দেখা মেলে কাগজের ফুল বিক্রেতা গৌতম মালাকার । ফুল বিক্রি নিয়ে গৌতম বলেন,আমার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলেটি ৩য় শ্রেনীতে পড়ে। আর মেয়েটি ছোটো । স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিন সকাল হলেই ফুল বিক্রি করতে চলে যাই পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। প্রতিটি ফুল ১০ টাকায় বিক্রি করে সারাদিনে কমপক্ষে ৩শ থেকে ৪ শ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। কোনো রকমে দিন পাত চলে।করোনার আগে মেলা বাজারে ভালো চলতো তখন হাজার -বারো শত টাকা আয় করা যেতো। কিন্তু বর্তমানে করোনার কারণে স্কুল বন্ধ, এখন আর তেমন জনসমাগম নেই, তাই ফুল তেমন বিক্রি হচ্ছে না, কোনো রকমে সংসার চলে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসা যদিও লাভজনক তারপরও জীবনের যথেষ্ট ঝুঁকিও রয়েছে। এভাবেই চলে আমার জীবন জীবিকা।