উলিপুরে যৌতুকের বলি অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ; শ্বাশুড়ি আটক
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম শনিবার রাত ১১:৫৯, ১৬ জুলাই, ২০২২
কুড়িগ্রামের উলিপুরে যৌতুকের জন্য ফাতেমা বেগম (২০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার বিকেলে সংঘটিত এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত শ্বাশুড়ি শাহিদা বেগম (৫০)কে আটক ক ঘাতক স্বামী শামীম হোসেন পলাতক রয়েছেন। উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কানিপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের পুত্র শামীম হোসেনের (২৫) সাথে, প্রতিবেশী সিদ্দিক আলীর কন্যা ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শামীম ও তার মা যৌতুক দাবী করে আসছিল। ইতিমধ্যে ফাতেমার বাবা শামীমকে যৌতুক হিসেবে ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছিল। তবুও তারা আরও ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেছিল।
অতিরিক্ত দাবীকৃত ১ লাখ টাকা না দেয়ায় স্বামী ও শ্বাশুড়ি প্রায়ই ফাতেমাকে পারিবারিক ভাবে নানা নির্যাতন ও অত্যাচার করে আসছিল। গত শুক্রবার দুপুরে (১৫ জুলাই) স্বামী শামীমকে নিয়ে বাবার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা ছিল ফাতেমার। ফাতেমা তার বাবার নিকট বাকী ১ লাখ টাকা না আনার কারণে স্বামী ও শ্বাশুড়ি দাওয়াত খেতে রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। পরে ফাতেমাকে স্বামী শ্বাশুড়ি মিলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক মারপিট করেন। এর এক পর্যায়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি।
আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে পথিমধ্যে শুক্রবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা নিলুফা বেগম বাদি হয়ে যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগ এনে শামীমসহ চারজনের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মেয়েটার বাবার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। পরে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায়। সামান্য বিষয় নিয়ে এমন নির্মম নির্যাতন খুবই অমানবিক।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা নিলুফা বেগম বাদি হয়ে গত শুক্রবার ১৫ জুলাই যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন-মামলা নং- ১২।
লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্বামী শামীমসহ বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।