এসএসসি পরীক্ষা : প্রধান শিক্ষকের গাফিলতি, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত উলিপুরের ২৫ শিক্ষার্থীর
সাজাদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম শনিবার রাত ০১:৩৩, ৪ জুন, ২০২২
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলায় ২৫ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম দুশ্চিন্তায় ভূগছেন এসব এসএসসি পরিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগিরা। ঘটনাটি উপজেলার খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এ।
অভিযোগ ও ভূক্তভোগি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এ ২০২২ সালে দুটি ট্রেডে (কম্পিউটার ও ইলেকট্রিক) ৩১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা দেয়ার কথা। নিয়মানুযায়ী গত ১৭ মে ফরম পূরণ করেন তারা। এরপর গত ২৪ মে স্কুলে গিয়ে জানতে পারেন যে ৩১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জনের ফরম পূরণ হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে চরম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এসব পরীক্ষার্থীরা।
পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাইলে অস্বীকার করেন তিনি। এক পর্যায়ে ওই প্রধান শিক্ষক তাদের ফরম পূরণ না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে ভূক্তভোগি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ প্রধান শিক্ষকের কাছে ধড়না দিয়েও কোন সুরাহা না পেয়ে গত ২৬ মে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভূক্তভোগি পরীক্ষার্থী রিফাত মিয়া জানান, নবম শ্রেণিতে আমি ৪.৫০ পেয়ে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছি। হেড স্যার (প্রধান শিক্ষক) ফরম পূরণের জন্য আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। কিন্ত এখন শুনছি আমাদের ফরম পূরণ হয়নি, আমরা পরীক্ষা দিতে পারব না। এ অবস্থায় শুধু আমি নই, বঞ্চিতরা সবাই আমরা চরম দূশ্চিন্তায় ভূগছি।
কম্পিউটার শাখার সুমি আক্তার, তাওহিদা খাতুন, ইলেকট্রিক শাখার আবু মুসা, ইদুল মিয়াসহ কয়েকজন ভূক্তভোগি পরীক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে হেড স্যারকে বললে তিনি বলেছেন, এখানে আমার করার কিছু নেই। উনি আমাদের এতগুলো জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিলেন। ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে চান দিশেহারা এসব পরীক্ষার্থী।
তবে খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এর প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এরা প্রত্যেকে নবম শ্রেনীতে ৩ বিষয়ের বেশি পরীক্ষায় ফেল করেছে। তাই তাদের ফরম পূরণ হয়নি। অনেকের টাকা ফেরত দিয়েছি। যেসব পরীক্ষার্থী আসেনি তাদের টাকা বিদ্যালয়ে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। দ্রুত খোঁজ নিয়ে এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।