আত্রাইয়ে ৯০ কোটি টাকার ৩ উপকেন্দ্র : থাকবে না আর বিদ্যুৎ ঘাটতি
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ১১:১৯, ৪ অক্টোবর, ২০১৯
এম এ ইউসুফ, নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া, বান্দাইখাড়া এবং পতিসরে পল্লী বিদ্যুতের তিনটি শক্তিশালী উপকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এ তিনটি উপকেন্দ্র চালু হলে আত্রাইয়ে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাপ থাকবে না। ফলে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবল থেকে মুক্তি মিলবে উপজেলার গ্রাহকদের।
৯০ এর দশকে আত্রাইয়ে পল্লী বিদ্যুতের কার্যক্রম চালু হয়। সে সময় হাতেগোনা কয়েকশ’ গ্রাহক ছিল সমগ্র উপজেলাজুড়ে। একটি ফিডারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হতো বিদ্যুৎ। তা-ও আবার নিয়ন্ত্রিত ছিল নওগাঁর অধীন। বর্তমানে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার ২০০ জন।
এর মধ্যে রয়েছে শিল্প, বাণিজ্যিক, আবাসিক ও দাতব্য সংযোগ। এসব গ্রাহকদের এলাকাভিত্তিক ছয়টি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে।
বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কয়েক বছর আগে আত্রাইয়ে পল্লী বিদ্যুতের একটি সাবস্টেশন গড়ে তোলা হয়। এ সাবস্টেশন থেকে ছয়টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে, কিন্তু বিপুল সংখ্যক সংযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ পাওয়া যায় খুবই কম। ফলে প্রাপ্ত ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ দিয়ে উপজেলা সদর ফিডার সচল রাখলেও মফস্বল ফিডারগুলোতে লোডশেডিংয়ের চাপ থাকত অনেক বেশি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এ স্লোগানকে বাস্তবায়িত করতে ২০১৮ সালে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের প্রচেষ্টায় আত্রাই উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়। শহর থেকে গ্রামে প্রতিটি জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ফলে এ উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে গেছে অনেক বেশি। এ চাহিদা মেটাতে নতুন করে ৩৩/১১ কেভি তিনটি উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন ভরতেঁতুলিয়া গ্রামে একটি, হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের বান্দাইখাড়া বাজারে একটি ও মনিয়ারী ইউনিয়নের পতিসরে একটি উপকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ভরতেঁতুলিয়া উপকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে প্রাথমিকভাবে তা চালু করা হয়েছে।
৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ উপকেন্দ্রগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেক কমে আসবে। বর্তমানে সচল ছয়টি ফিডারের গ্রাহকদের ১০ ফিডারের আওতায় আনা হবে। এতে করে বর্তমানের চেয়ে তারা অনেক বেশি বিদ্যুৎ পাবেন।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আত্রাই জোনের এজিএম মো. ফিরোজ জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের পরামর্শে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। এলাকাবাসী যেন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পান এবং লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে না হয় এ জন্য ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি শক্তিশালী ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের ফিডারগুলো অনেক লম্বা রয়েছে। এ উপকেন্দ্র তিনটি চালু হলে ফিডার সংখ্যা বেড়ে যাবে। ফলে প্রতি ফিডারের আওতায় গ্রাহক সংখ্যা কমে আসবে। এতে ফিডারভিত্তিক বিদ্যুতের চাপ কমে আসবে। তখন আর গ্রাহকদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে না।