সংঘর্ষের ঘটনা পরিকল্পিত, দুই শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার: মির্জা ফখরুল
মেঘনা নিউজ ডেস্ক বুধবার রাত ০৯:৫০, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পরিকল্পিতভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দলীয় কার্যালয় থেকে কেন্দ্রের শীর্ষপর্যায়ের নেতাসহ অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সংঘর্ষের পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরে ব্যাগ নিয়ে ঢুকেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ ব্যাগ-ট্যাগ নিয়ে ঢুকেছে। এগুলোকে বিস্ফোরক হিসেবে দেখাবে। এসব দেখিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করবে। এরচেয়ে খারাপ কাজ আর কিছু হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার ডিএমপি কমিশনারকে কথা দিয়েছি, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো। আশা করেছিলাম, আজকে আমরা ডিএমপির কাছ থাকে সমাবেশের অনুমতি পাবো। সেই আশায় আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের সঙ্গে বিট্রে করেছে। তারা সশস্ত্রভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি দলের কার্যালয়ে প্রবেশ করার জন্য সবার সঙ্গে কথা বলেছি। কমিশনার, হোম মিনিস্টার.. কিন্তু কথা বলে লাভ নেই। ইনফ্যাক্ট এখানে কোনো সরকারই নেই।’
জানা গেছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। দুপুরে নেতাকর্মীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। এসময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে দলের কার্যালয়ের সামনের সড়কে নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করেন। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন।
এদিকে, বিকেল ৪টার কিছু সময় পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সামনের সড়কে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
এসময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা এ্যানী ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায়। তবে সাংবাদিকরা ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে তাদের আটক করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালামসহ প্রায় ৩৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এর আগে নয়াপল্টন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে আটক করা হয়।