রাজারহাটে লোকসানের মুখে আলুচাষিরা
রমেশ চন্দ্র সরকার,রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) শুক্রবার সন্ধ্যা ০৬:৫০, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
কুড়িগ্রাম জেলায় বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৫টি হিমাগার আছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এ বছর হিমাগারগুলোতে আলু পরিপূর্ণ। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ খাবারের দোকানগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেভাবে হিমাগারগুলো থেকে আলু বের হয়নি। ফলে বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ থেকে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে লাভের আশায় আলু মজুত করে এখন বড় লোকসানের মুখে আলুচাষি ও মজুতদাররা।
গত বছর আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাষিরা আলু চাষ করে। অনেকে বেশি দামের আশায় আলু হিমাগারে মজুদ করে। কিন্তু বাজারে ভালো দাম না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে কৃষকরা। লোকসান ঠেকাতে আলু রপ্তানির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। হিমাগার খরচসহ প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ পড়ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। আর বর্তমান আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকায়। প্রতি কেজিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা। এখন প্রতি বস্তা ডায়মন্ড আলুর দাম ৬০০ টাকা আর হিমাগারের ভাড়া প্রতি বস্তা ২৬০ টাকা এবং আলু সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি খালি বস্তা কিনতে হয়েছিল ১শ টাকা । হিমাগার গুলোতে পাইকারি ব্যবসায়ী না যাওয়ায় আলু পচে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ব্যাপারীরা জানান, হিমাগার থেকে ঋণ নিয়ে আলু সংরক্ষণ করছি। কিন্তু ভালো দাম না থাকায় এবার লোকসান গুনতে হবে। আলু চাষী আব্দূর রাজ্জাক জানান, প্রতি বছর প্রায় ১০০ একর জমিতে আলুর আবাদ করি কিন্তু আলুর দাম না থাকায় এ বছর প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে। লোকসান ঠেকাতে এবং কৃষক বাঁচাতে সরকারের প্রতি আলু বিদেশে রপ্তানির করার দাবিও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সেকেন্দার বীজ হিমাগার লিমিটেড এর মালিক মোঃ সেকেন্দার আলী জানান, প্রতিটি হিমাগারের মালিক আলুর বিপরীতে কৃষকদের ঋণ দিয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে আলুর বাজার দর কম থাকায় এখনো প্রতিটি হিমাগারে প্রায় ৭০ ভাগ আলু সংরক্ষণে রয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানান, এবারে আলুর মৌসুমে বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলুর উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। এবছর আলুর বাম্পার ফলন ও বাজারে শাকসবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আলুর মূল্যে ধস নেমেছে।