যেভাবে হবে এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিনিধি সোমবার রাত ০২:০৬, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
চলতি বছরও এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে গতবারের চেয়ে এবার দুটি পাবলিক পরীক্ষাতেই বিষয় বাড়ছে। এর মধ্যে এসএসসিতে তিনটি বিষয় বাদ যাচ্ছে। আর এইচএসসিতে বাদ যাচ্ছে একটি বিষয়। এ ছাড়া এবারও এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা হবে কম নম্বরে ও কম সময়ে।
এসব প্রস্তাব দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন ‘আন্তশিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানস কমিটি’। গতকাল রোববার কমিটির সভায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে নির্বাচনী পরীক্ষা(টেস্ট) না নেওয়ারও প্রস্তাব এসেছে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করেছে কমিটি। করোনা সংক্রমণের কারণে ঠিকমতো শ্রেণিকার্যক্রম না হওয়ার কারণেই মূলত এসব প্রস্তাব এসেছে।
আন্তশিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানস কমিটির বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, ধর্ম এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বাদে বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা। আর এইচএসসিতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বাদে বাকি বিষয়গুলোর ওপর পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এসএসসিতে বিভিন্ন বিষয়ে ১২টি পত্রে ও এইচএসসিতে বিভিন্ন বিষয়ে ১৩টি পত্রে পরীক্ষা হয়।
এখন পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত আছে, তাতে আগামী জুন মাসে এসএসসি এবং আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা হবে। ইতিমধ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
করোনার সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর গত বছরের শেষ দিকে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসিতে শুধু গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এবার সেগুলোর সঙ্গে বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ বেশির ভাগ বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করলেন শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা।
নম্বর বিভাজনের ক্ষেত্রে প্রস্তাব এসেছে, যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা নেই, সেসব বিষয়ে ৫৫ নম্বরের (সৃজনশীল ৪০, এমসিকিউ ১৫) পরীক্ষা হবে। আর যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা আছে, সেসব বিষয়ে ৪৫ নম্বরের (সৃজনশীল ৩০, এমসিকিউ ১৫) পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে আজকের সভায়।
করোনা মহামারির কারণে এসএসসি ও এইচএসসির পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে। করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। এ কারণে ক্লাসের সঙ্গে পরীক্ষাও পিছিয়ে যায় বা বাতিল করতে হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছিল। কিন্তু নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। এই ছুটি শেষে ২২ ফেব্রুয়ারি আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে।
গতকালের সভার বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রস্তাবগুলো এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে খুব শিগগির এসব সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।