ঢাকা (রাত ১২:৩৮) সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


ভোলাহাটে ইউএনওর নির্দেশে নির্মাণ শ্রমিকদের উপর হামলা

এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ Clock শুক্রবার রাত ১০:২৮, ৩০ জুলাই, ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চরধরমপুর বিন্দুপাড়ায় ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার একশতটি গৃহ নির্মানকালে একাধীক নির্মাণ শ্রমিককে বেধড়ক পিটিয়েছেন ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বডিগার্ড আনসার বাহিনী। আর এই শ্রমিক পেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন খোদ ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগি আহত নির্মাণ শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন, ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভূমিহীনদের জন্য দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নির্মিতব্য বাড়ি পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল।এ সময় তার সাথে ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) শেখ মেহেদী ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কাউসার আলম সরকার, ভোলাহাট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভুটু ও মো. আফজাল হোসেন হিরো।

পরিদর্শণকালে বাড়ীর র্নিমাণ কাজে ত্রুটি আছে এমন অভিযোগ এনে নির্মাণ শ্রমিদের পেটাতে তার বডিগার্ড আনসারদের নির্দেশ দেন সমর কুমার পাল। ফলে চাকরি বাঁচাতে নির্দেশ পেয়েই আনসার সদস্যরা নির্মাণ শ্রমিকদের বেধড়ক পেটাতে থাকে। এ সময় নির্মাণ শ্রমিক বল্টু (৫০), আনোয়ার (৩৫), সামাউন (৩১), কাবিরুল (৩০), রবিউল (৪০) বেধড়ক পিটুনীর স্বীকার হলে কর্মরত আরো  ৪০/৫০ জন নির্মাণ শ্রমিক কাজ ছেড়ে এদিক ওদিক পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন।

ভূক্তভুগি নির্মাণ শ্রমিকরা আরো জানান, ইউএনও স্যার কাজের কাছে গিয়ে ভুল ধরে আনসার সদস্যদের আমাদের পেটাতে বলেন আর বলেন এক একজনকে মেরে ফেলে দাও, জেলে দিলে বৌ-বাচ্চা কষ্ট পাবে। মারের সময় আনসার সদস্যদের পা ধরে ক্ষমা চাইতে গেলে তারা ইউএনও স্যারের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলে সেটা করার পরও তিনি আমাদের ছাড় দেননি। আর তাই এই অন্যায়ের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কোনো নির্মাণ শ্রমিক কাজে ফিরে যাবে না।  মারধরের এই ঘটনা ভোলাহাট  ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্মাণ শ্রমিকদের বেধড়ক পিটানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিদর্শণকালে সাথে থাকা ভোলাহাট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভুটু ও মো. আফজাল হোসেন হিরো।

ভোলাহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইয়াজদানী জর্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিমার্ণ শ্রমিকেরা আমাকে মারধরের  বিষয়টি জানিয়ে বলেছেন এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না করা হলে তারা নির্মাণ কাজে যোগ দিবেন না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালকে জানানো হয়েছে। তিনি ভালোভাবে কাজ করিয়ে নিতে বলেছেন।

তবে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালের সাথে মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ দিন বাইরে থাকায় বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাকিউল ইসলামের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে অভিয়োগ করলে অভিযোগকারীকে নিজ অফিসে ডেকে দেড় ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন সমর কুমার পাল। পরে বিষয়টি ভাইরাল হলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দেন তিনি। এছাড়া ২৫ জুলাই রাতে নতুন হাজিপাড়া গ্রামে বাল্য বিয়ে বন্ধের অভিযানে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তারই সামনে আনসার সদস্যরা তোফজ্জুল হক (৬৫), গোলাম আজম (৩৯) ও সারোয়ার (২১) কে পেটান।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT