নড়াইল-কালনা মহাসড়ক পাশের পানিশুন্য খাল ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের দাবি
ইকবাল হাসান,নড়াইল শুক্রবার রাত ১০:১১, ২৩ এপ্রিল, ২০২১
নড়াইল-কালনাঘাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পানিশুন্য মরা খালটি এখন মানুষের গলারকাটায় পরিণত হয়েছে। শুরুতেই এই খালটি ” জিয়ার খাল” নামেই পরিচিতি। এই খালটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। সেখানে মার্কেট নির্মাণের দাবি এলকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নড়াইল-কালনাঘাট সড়ক নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে সড়কের পাশে মাটি কাটায় একটি খালের সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হয় জিয়ার শাসনামলেই এ খালটির সৃষ্টি হয়। তাই এটি জিয়ার খাল নামে পরিচিতি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্যে বর্তমান সরকার সড়কটিকে মহাসড়কে রূপান্তরিত করে। পদ্মা সেতু, কালনা সেতুর সাথেই মহাসড়কটি সংযুক্ত। এখানে ২ লেন থেকে উন্নীত হয়ে ৬ লেনের রাস্তা হবার কথা রয়েছে। ঢাকা-কালনা-নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়ক এটি। সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে এলাকায় ব্যবসার প্রসার ঘটবে ।
এই খালটি প্রায় সারা বছরই পানিশুন্য থাকে। নদীর সাথে কোন সংযোগ না থাকায় বৃষ্টির পানিই মূলত ভরসা। বৃষ্টির পানির কারনে বছরের ৩/৪ মাস এ খালে সামান্য পানি থাকে। মহাসড়কের পাশে খালের অবস্থান থাকাটা রাস্তার স্থায়ীত্বের জন্য বড় বাধা। তাছাড়া মাঝে মাঝে মহাসড়ক থেকে যানবাহন ছিটকে খালে পড়ে বড়বড় দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়। খালের অল্প পানিতে মশার জন্ম হয়। সাধারণ মানুষ রাস্তার পাশের খালে ময়লা আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। পথচারী বা যানবাহনের আরোহীদের বিষাক্ত বাতাস যেন জীবণ দুর্বিসহ করে তোলে।
মহাসড়কের পাশের জমিতে যেখানে খালটি সৃষ্টি হয়েছে সে খালটি ভরাট করলে সেখানে বড় মার্কেট গড়ে তোলা সম্ভব।ফলে হাজার হাজার বেকার মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলতে পারবে। খালের উপারের বাসিন্দারা চলাচলে বাঁধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। খাল থাকার কারনে কেউই বড় যানবাহনে করে মালামাল বহন করতে পারেন না। তাছাড়া, মরা এই খালের কারনে খালের উপারের জমিতে শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। বিবিধ কারনে খালটি এখন মানুষের কলার কাটায় পরিণত হয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সৈয়দ বোরহান উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, মরা খাল থাকায় মূল মহাসড়ক থেকে যানবাহনে করে খালের উপারে মালামাল নেয়া অসম্ভব। তাই খালের উপারে শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে না। কর্তৃপক্ষের উচিত সময়োপযোগী সিদ্দান্ত নেয়া।
লক্ষীপাশা গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী ও শরিফুজ্জামান বলেন, বর্তমানে নবগঙ্গা নদী খনন করা হচ্ছে। নদীর দুপাড়ে প্রচুর মাটি মজুদ হচ্ছে। নবগঙ্গার মাটি এমনিতেই হরিলুট হচ্ছে। নবগঙ্গার মাটি দিয়ে খালটি ভরাট করতে পারলে সেখানে মার্কেট গড়ে তুললে এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বুলবুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মরা এ খালটির প্রয়োজনীয়তা নেই। বরং মহাসড়কের জন্য এটি হুমকি।
পথচারী মাসুদ, সেলিম, মামুন বলেন, খালপাড়ের বাসিন্দারাসহ স্থানীয়রা মরা এ খালের মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলে। তাই মারাত্বক দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে বা যানবাহনে চলাচলে সময় নাক বন্ধ করে যেতে হয়। খালটি ভরাট করে কর্তৃপক্ষের নিকট মার্কেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
লক্ষীপাশা ভূমি অফিসের নায়েব (ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা) মোঃ হায়দার আলী জানান, মরা এ খালটির জমির মালিক সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিছু করবার এখতিয়ার তাদের।
স্থানীয়রা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী মরা এ খালটি বন্ধে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।