ঢাকা (ভোর ৫:৩২) শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
শিরোনাম

নেকব্যান্ড নাকি ইয়ারবাডস কোনটি আপনার জন্য



গান শোনা বা ফোনে কথা বলার মতো কাজগুলো করার জন্য পকেট থেকে মোবাইল বের করার ঝামেলা বহুকাল আগেই রেহাই দিয়েছে ইয়ারফোন। তারপর ২০১৬ সালে টেক জায়ান্ট অ্যাপল বাজারে নতুন ইয়ারবাডস নিয়ে আসায় তার পেঁচানো ইয়ারফোনের চাহিদায় ভাটা পড়ে। আবার ব্যবহারের সুবিধার জন্য অন্যান্য কোম্পানিগুলো নিয়ে এসেছে নেকব্যান্ড।

কিন্তু এই দুটির মধ্যে কোনটি ভালো তা নিয়ে বেশ দ্বিধায় পড়তে হয় ক্রেতাদের। এজন্য ব্যক্তিভেদে কোনটি কেনা উচিত হবে তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ থাকছে আজকের আলোচনায়।

ইয়ারফোনের আধুনিক সংস্করণ হিসেবে ছোট স্পিকারের আদলে তৈরি করা ফ্যাশনেবল ডিভাইস হলো ইয়ারবাডস, যেটি কানে সুন্দরভাবে এঁটে যায় এবং তারের ঝামেলা থেকে রেহাই দেয়। অন্যদিকে নেকব্যান্ড ভালো সাউন্ড কোয়ালিটি দেওয়ার পাশাপাশি ইয়ারবাডসের কান থেকে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর করে।

এ তো গেল মূল পার্থক্য। এগুলো ছাড়াও রয়েছে আকর্ষণীয় ডিজাইন, চার্জিং সুবিধা, স্থায়ীত্ব, কথা বলার সুবিধা ইত্যাদির মতো নানা বিষয়াদি।

কোনটির ব্যবহার সুবিধাজনক

সবাই যেহেতু ব্যবহারের সুবিধার জন্যই তারবিহীন ইয়ারফোন কেনার জন্য বেশি আগ্রহী থাকে, তাহলে এটি দিয়েই শুরু করা যাক। এ ধরনের ইয়ারফোনে অনেক ধরনের সুবিধা থাকলেও, সবার আগে প্রাধান্য পায় কোনটি নড়াচড়া না করে এক জায়গায় আটকে থাকতে পারবে।

এক্ষেত্রে নেকব্যান্ডে রাবারজাতীয় একটি তারের সঙ্গে দুইটি ইয়ারপিস সংযুক্ত থাকে এবং তারটি গলায় পরা থাকে বিধায় কোনো কারণে কান থেকে ইয়ারপিস খুলে গেলেও ভয়ের কারণ থাকে না। কোনো ব্যতিব্যস্ততা ছাড়াই আবার কানে গুজে দিলেই হলো।

এটি মূলত যারা প্রায়ই নানা জায়গায় যান এবং জিম করেন তাদের জন্য স্বস্তি দেয়। যেখানে ইয়ারবাডস ব্যবহার করলে যেকোনো সময় রাস্তায়, সোফায়, জিমের যন্ত্রপাতির মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এছাড়া বাইরের কারো সঙ্গে তাৎক্ষণিক সাড়া দিতে চাইলে সহজেই নেকব্যান্ডের ইয়ারপিস খুলে গলায় ঝুলিয়ে রাখা যায়। যেখানে ইয়ারবাডস খুলে ফেলার প্রয়োজন হলে সেটি বক্স বের করে রাখতে হয়। আর নেকব্যান্ডে স্বল্প চার্জ থাকলেও চালু করা যায় এবং চার্জ না ফুরানো পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে ইয়ারবাডস ব্যবহারের পর নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় না।

তবে দুটি ডিভাইসে ব্লুটুথ এবং এএনসি পারফর্মেন্স সাপোর্ট করে। কিন্তু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইয়ারবাডসে তারবিহীন চার্জ দেয়ার সুবিধা পাওয়া গেলেও নেকব্যান্ডে পাওয়া যায় না। বর্তমানের বেশিরভাগ ইয়ারবাডস স্পর্শের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় আর নেকব্যান্ডের বাটন ফিডব্যাক দেয়।

ইয়ারবাডসের সঙ্গে একটি কেইস থাকার জন্য সহজে পকেটে রেখে ব্যবহার করা যায় অন্যদিকে নেকব্যান্ডের বিল্ড কোয়ালিটি তেমন সুবিধাজনক না হওয়ায় নতুন ইভিএ কেইস কেনার প্রয়োজন হয়।

তবে ইয়ারবাডসের কেইস থেকে ইয়ারপিস বের করলে এবং নেকব্যান্ডের ম্যাগনেটিক ইয়ারপিসগুলো আলাদা করামাত্র মোবাইল ফোনের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।

কোনটি আরামদায়ক

তারবিহীন ইয়ারবাডস এমনভাবে তৈরি করা হয় যে ব্যবহারকারী প্রায় ভুলেই যান তার কানে কোনো ডিভাইস অবস্থান করছে। তবে কানের মাপের উপর নির্ভর করে ব্যক্তির আরামের বিষয়টি।

অন্যদিকে নেকব্যান্ডের তার ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকৃষ্ট করে। ব্যবহারকারী যখনই মাথা ঘুরান তারে টান অনুভূত হয়। যা অনেক সময় গান শোনার সময় মনোযোগ নিবিষ্ট করতে বাধা দেয় এবং বিরক্তির উদ্রেক ঘটায়।

শব্দের মান কেমন

যেহেতু সাধারণ ইয়ারফোনের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে এই ধরনের ডিভাইস কিনতে হয়, সেক্ষেত্রে শব্দের মানের বিষয়টি উপেক্ষা করলে চলে না। তবে এগুলোর শব্দের মান কেমন হবে সেটি ডিজাইনের থেকে ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে।

নেকব্যান্ড এবং ইয়ারবাডস এএনসি থাকলেও সাউন্ডে দুটির মধ্যে বেশ বড় একটি পার্থক্য রয়েছে। শুধুমাত্র ইয়ারবাডসে চারপাশের সাউন্ডকে সিমুলেট করার অপশন আছে, স্যামসাং এটিকে বলা হয় ৩৬০ অডিও। তবে এই সুবিধা কেবল দামী ইয়ারবাডসে পাওয়া যায়।

কিন্তু সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো পেতে চাইলে গতানুগতিক ইয়ারফোন ব্যবহার করাই ভালো, যা নিঃসন্দেহে তারবিহীন ইয়ারবাডস ও নেকব্যান্ডের চেয়ে ভালো হয়ে থাকে।

কোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি

সত্যিকার অর্থে তারবিহীন ইয়ারফোনে ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশ সীমিত। যেহেতু ইয়ারবাডসের কেইস ছোট আকারে বানাতে হয় যাতে পকেটে অনায়াসে রাখা যায় এবং নেকব্যান্ডের তার খুব বেশি ভারী হলে কাঁধে ব্যথা হতে পারে বিধায় ব্যাটারির আকারও ছোট হয়।

তবে ইয়ারবাডস বেশিরভাগ সময় কেইসের মধ্যে থাকায় এটিতে হয় ১০০ শতাংশ ব্যাটারির চার্জ থাকে কিংবা চার্জশূন্য অবস্থায় থাকায় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ধর্ম অনুযায়ী বেশিদিন ব্যাটারি কার্যকর থাকতে পারে না। অন্যদিকে নেকব্যান্ডে বেশি চার্জিং সাইকেল পূরণ হয় না বিধায় এটি টিকে যায়।

কোনটির স্থায়িত্ব কেমন

সাধারণত ইয়ারবাডসে পড়ে গেলে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বিধায় এটি খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। আর নেকব্যান্ডের তার বেশি জোরে টান দেওয়ার ফলেও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

তবে ইয়ারবাডসের একটি ইয়ারপিস নষ্ট হয়ে গেলেও অন্যটি ব্যবহার করা যায় কিন্তু নেকব্যান্ডের তারের ভিতরে কোনো ক্ষতি হলে সেটি পুরোপুরি বাতিল হয়ে যায়।

কোনটির কল কোয়ালিটি ভালো

নেকব্যান্ডে থাকা ইন-লাইন মাইক কল আসার সময় তারের কাছে মুখ নিলে কথা পরিষ্কারভাবে শোনা যায়। অন্যদিকে বর্তমানের ইয়ারবাডসে সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ পরিহার করার আশ্বাস দেয়।

তবে ইন-লাইন মাইকবিশিষ্ট নেকব্যান্ডে দামী ইয়ারবাডসের চেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু ইন-লাইন মাইক তারের মধ্যে থাকলে সেক্ষেত্রে কিছুটা অসুবিধা হয় তবে সেক্ষেত্রেও ইয়ারবাডসের চেয়ে ভালো।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT