লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারদর
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০৯:৩৭, ১০ জুন, ২০২২
নিত্যপণ্যের লাগামহীন দরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওইদিন সন্ধ্যায় লিটারে সাত টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। শুক্রবার (১০ জুন) বাজারে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিনের দাম রাখা হয়েছে ২০৫ টাকা। আগের সপ্তাহে এই সয়াবিন ২০০ টাকার কমে পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেট ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি, আগের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। তারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে অন্তত ছয় থেকে সাত ধরনের পণ্যের দাম নতুন করে বেড়েছে। লাগাতার অভিযানের পরও কমছে না চালের দাম। খুচরা বিক্রির দোকানে বিআর-২৮ চালের কেজি কেজি হচ্ছে ৫৪-৫৫ টাকায়। পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৩ টাকায়, ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বিআর-২৯। এছাড়া ভালো মানের চিকন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকা কেজিতে। নাজিরশাইল ৭৮-৮০ টাকা, চিকন আতপ চাল ৬৮ টাকা ও পোলাও চাল ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়তি থাকায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে চিনি, আলু, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, ডাল, শুকনা মরিচ, গুঁড়া দুধ ও বেশ কিছু সবজি। লিটারে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম।
ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে এক কেজি ওজনের ব্রয়লার মুরগি কিনতে দাম পড়ছে ১৫০-১৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ১৪০ টাকায় পাওয়া যেতো। শুক্রবার সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়। কক বা লেয়ারের কেজি ২৯০ টাকা। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে লাল ও সাদ ডিম ৪৫ টাকা হালি, হাঁসের ডিম ৬০ টাকা হালি, কক মুরগির ডিম ৪৫ টাকা হালি, কোয়েল পাখির ডিম ১২ টাকা হালি, দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকার চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৪ টাকা কেজি দরে।
বাজারে মুগডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮ টাকা, মসুর ডাল ১৩৮ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা। আমদানি করা শুকনো মরিচ ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ২৮০ টাকা কেজি দরের শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। ২০০ টাকা কেজি দরের শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে কয়েক দফা দাম বেড়ে ২০০ স্পর্শ করা আমদানি করা রসুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯০-২০০ টাকা। তবে দেশি রসুনের কেজি আগের মতো ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা এবং হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। ২০ টাকা কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে।
মসলার মধ্যে আগের তুলনায় বেড়েছে জিরার দাম। ১০ টাকা দাম বেড়ে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। বড় এলাচ ২৪২০ টাকা, ছোট এলাচ ১৬২০ টাকা, দারুচিনি ৪০০ টাকা, লবঙ্গ ১১২০ টাকা, কালো মরিচ ৭১০ টাকা, সাদা মরিচ ৮৬০ টাকা, কালোজিরা ১২০ টাকা, সরিষা ১১০ টাকা, আলুবোখারা ৪২০ টাকা, কিশমিশ ৩৮০ টাকা, মেথি ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। অবশ্য মাস দেড়েক আগে গাজরের কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০, শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০, করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০, মিষ্টিকুমড়া ৩০, চিচিঙ্গা ৪০, চাল কুমড়া ৩০, পটোল ৪০, কাঁকরোল ৬০, ঢেঁড়স ৪০, কচুর মুখী ৪০, পটল ৩০, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়।
বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকাতে। এক কেজি ওজনের তেলাপিয়া ১৮০-২০০, চাষের কই ১৮০-১৯০, পাঙাশ ১৬০-১৮০, শিং ৩০০-৪৬০, শোল ৪০০-৬০০, পাবদা ৩০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বড় রূপচাঁদা ১২০০ টাকায়, ছোট রূপচাঁদা ১১০০ টাকায়, বড় পোয়া ৫৫০ টাকায়, লাল কোরাল ৬০০-৭০০ টাকায়, বাটা ২৫০ টাকায় ও বাতাসি মাছ ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।