ঢাকা (দুপুর ১:৩৪) শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান সানাউল্লাহ হলেন নির্বাচন কমিশনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার, আটক-১ Meghna News নাগরপুরে যদুনাথ স. প্রা. বিদ্যালয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Meghna News দ্রুত সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানাল পরিবার Meghna News সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটের সম্পাদক গরম পানিতে ঝলসে গুরুতর আহত Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাস জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে নিহত একজন Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর আদিবাসী শিশুর মরদেহ উদ্ধার Meghna News মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় যুবক নিহত

পীরগাছায় কিন্ডারগার্টেনগুলো বন্ধ হওয়ায় বিপাকে শিক্ষক ও পরিচালকরা

একরামুল ইসলাম, পীরগাছা, রংপুর একরামুল ইসলাম, পীরগাছা, রংপুর Clock শনিবার রাত ০৯:৪৫, ২৫ জুলাই, ২০২০

টানা পাঁচ মাস কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে সরকারি নির্দেশ মানতে বন্ধ করেছে দেশের বেসরকারিভাবে পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো।

দীর্ঘসময় ধরে স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে হাজারো ছেলেমেয়ে। অনেকে আবার শিক্ষকতা পেশা বদল করে অন্য পেশা জড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু সেখানে তারা নিজেকে মানিয়ে চলতে পারছে না। ফলে হতাশায় ভুগছে তারা। একদিকে যেমন কেজি স্কুলের শিক্ষকেরা বেকার হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কেজি স্কুলের পরিচালিকরা পড়েছে বিপাকে। কারণ উপজেলার অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো ভাড়ায় পরিচালিত। না পারছে তারা শিক্ষকদের বেতন দিতে, না পারছে তারা কিন্ডারগার্টেনগুলো ছেড়ে দিতে। পরিচালকরাও দোটানায় পড়েছে। কেজিগুলোর একমাত্র আয়ের উৎস ছিল শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন। যেহেতু কেজি স্কুলগুলো বন্ধ, শিক্ষার্থীদেরও পক্ষে মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব নয়। তাই কেজি স্কুলগুলোর মাসিক আয় বন্ধ হয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নে অবস্থিত পাওটানাহাট কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক ও ও নর্থবেঙ্গল কিন্ডারগার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল সোসাইটির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা চঞ্চল বলেন, এই কিন্ডারগার্টেনগুলোতে অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অথচ আজ তারা বেকার। আমরা সরকারকে অনেক চিঠি, স্মারকলিপি দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলার পাকারমাথায় অবস্থিত মেধাবিকাশ শিক্ষা নিকেতনের পরিচালক ও ও নর্থবেঙ্গল কিন্ডারগার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল সোসাইটির উপজেলা শাখার অর্থ সচিব শিশির কুমার রায় বলেন, বর্তমানে আমাদের কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো গত ১৭ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো চালু না থাকার কারণে স্কুলের অবকাঠামোসহ আসবাবপত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়ায় চালিত, মালিকেরা ভাড়ার টাকা দিতে না পারায় অনেক প্রতিষ্ঠান বাড়ী ছেড়ে দেয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে। অথচ এই কিন্ডারগার্টেনগুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থী জন্ম নেয়। তিনি আরও জানান, নর্থবেঙ্গল কিন্ডারগার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল সোসাইটির অধীনে উপজেলায় ৩২টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। এতে শিক্ষক রয়েছে প্রায় ৪০০ জন। শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৪ হাজার আটশত। এর পাশাপাশি নর্থ ভিউ, নর্থ লাইন, বৃহত্তর রংপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন ও ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনেক স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।

বৃহত্তর রংপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের উপজেলা সভাপতি ও আব্দুস কুদ্দুছ কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক খোরশেদ কবির বাবুল বলেন, বৃহত্তর রংপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের অধীনে উপজেলায় ১২টি কিন্ডারগার্টেন আছে। এতে শিক্ষক রয়েছে ১৮০ জন। আর শিক্ষার্থী আছে প্রায় এক হাজার ৫শত জন। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে সব মিলে ২১জন স্টাফ আছে। স্কুলের আয় বন্ধ হওয়ার কারণে তাদের মাসিক বেতন দিতে পাচ্ছি না। স্টাফদের সামান্য কিছু বেতন দিলেও তা আবার ধার করে দিতে হচ্ছে। আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সরকারের কাছে আবেদন করছি, প্রণোদনার পাশাপাশি যদি দেশের সব কিন্ডারগার্টেনগুলোকে সরকারিভাবে সহজ শর্তে রেজিস্টেশনের ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে আমরা কিন্ডারগার্টেনগুলোকে আরও ভালোভাবে চালাতে পারতাম। নর্থ লাইন এসোসিয়েটের উপজেলা উপদেষ্টা ও পবিত্রঝাড় চাইল্ডড্রীম একাডেমীর পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন জানান, নর্থ লাইন এসোসিয়েটের অধীনে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। আমার চাইল্ডড্রীম প্রতিষ্ঠানে সব মিলে ২০জন স্টাফ রয়েছে। তাদের মাসিক বেতন দিতে পাচ্ছি না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমরা দুর্ষিহ অবস্থায় আছি।

উপজেলার নেকমামুদ ল্যাবরেটরী মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ মশিউর রহমান শুভ বলেন, গত ১৭ মার্চ থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী মিলে ৪০ জন স্টাফ আছে। আমরা কাউকে মাসিক বেতন দিতে পাচ্ছি না। শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও মাসিক ফি চাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো প্রণোদনা পাইনি।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমীন প্রধানকে কয়েকবার ফোন করা হলেও, তিনি ফোন না ধরায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মেধাবিকাশ শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষক সুমন চন্দ্র বলেন, আমরা কয়েক মাস থেকে বাড়িতে বসে আছি। কোনো কাজ কর্ম নেই। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আমাদের যেন প্রণোদনা বা সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে দেন। উপজেলার পশ্চিমদেবু ক্রিয়েটিভ কোচিং সেন্টারের পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, দীর্ঘদিন থেকে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ আছে। আমাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

এ সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুর রহমান বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর জন্য এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো প্রণোদনা আসেনি।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT