নোয়াখালীতে দিঘিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে উপ–কর কমিশনারের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার রাত ০২:১৬, ৫ মে, ২০২২
ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দিঘিতে সাঁতার কাটতে নেমে উপ-কর কমিশনার ওমর ফারুক ওরফে মাসুম (৩৫) মারা গেছেন।
বুধবার বেলা সোয়া একটার দিকে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মল্লিকা দিঘিতে নেমে তিনি নিখোঁজ হন। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, মৃত ওমর ফারুক উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি ৩১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। সর্বশেষ ঢাকার কর অঞ্চল-১৩তে উপ-কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার বেলা সোয়া একটার দিকে উপ-কর কমিশনার ওমর ফারুকসহ চার বন্ধু মল্লিকা দিঘিতে সাঁতার কাটতে নামেন। চারজনই সাঁতার কেটে দিঘির মাঝখানে যান। এরপর তিন বন্ধু তীরে ফিরে এলেও ওমর ফারুক আসেননি। তিনি দিঘিতে নিখোঁজ হন।
এ ঘটনার পরপরই আশপাশের লোকজন ওমর ফারুকের খোঁজে দিঘিতে উদ্ধার অভিযানে নামেন। কিন্তু তাঁর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ডুবুরি দল। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি আবদুল্লা আল-নোমান বলেন, তাঁর শ্যালক ওমর ফারুক আজ সকালে ছয় বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। দুপুরে তিন বন্ধুকে নিয়ে মল্লিকা দিঘিতে সাঁতার কাটতে নামেন। দিঘিতে নেমে সাঁতার কেটে মাঝামাঝি গিয়ে তিন বন্ধু ফিরে এলেও তাঁর শ্যালক ফিরতে পারেননি। তিনি নিখোঁজ হন। বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
আবদুল্লা আল-নোমান জানান, তাঁর শ্যালকেরা তিন ভাই ও তিন বোন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ওমর ফারুক মেজ। ওমর ফারুকের এক ছেলে, এক মেয়ে আছে। তাঁর পরিবার চট্টগ্রামে থাকে। ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসেনি পরিবার। তিনি (ওমর ফারুক) বন্ধুদের নিয়ে আজ গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিঘিতে উপ–কর কমিশনার নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে যান নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক) সাংসদ এইচ এম ইব্রাহিম। তিনি সেখানে উপস্থিত থেকে উদ্ধারকাজ তদারক করছিলেন। সাংসদের গ্রামের বাড়িও খিলপাড়া এলাকায়। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তার নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে আত্মীয়স্বজনসহ আশপাশের হাজারো মানুষ দিঘির পাড়ে ভিড় করেন।