নাগেশ্বরীতে ঝালমুড়ি ও আচার খেয়ে ১৫ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি
নিজস্ব প্রতিনিধি শনিবার সন্ধ্যা ০৬:৫৮, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চন্ডিপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।প্রাথমিকভাবে ফুড পয়জনিং বা মাস সাইকোজেনিক ইলনেস রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে ধারণা করেছেন চিকিৎসকরা।এ ঘটনায় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালেও অপর এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ ঘটনায় ওই স্কুলের বাইরে আচার বিক্রেতা ইমান আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাগেশ্বরী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফা রানী জানান, পাইলট প্রকল্পের অধীনে উপজেলার এ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে। ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। তাকে অফিস কক্ষে এনে মাথায় পানি ঢালাঢালি করে চিনি সরবত খাওয়ানোর পরও সুস্থ না হলে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর একইভাবে পরপর ১৫ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাদের নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।শিক্ষার্থীদের নিকট জানা যায়, স্কুলে আসার পর অ্যাসেম্বলি শেষ করে ক্লাসে গেলে প্রথমে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মিম অসুস্থ হয়। এর পরপরই সপ্তম শ্রেণির শিমু, সায়মা, মিম, অষ্টম শ্রেণির লুবনা, মাসুম বিল্লাহ, ববিতা, বিলকিছ, জোবায়ের, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হানিফ, চতুর্থ শ্রেণির ফাহাদ, ষষ্ঠ শ্রেণির রুবাইয়া, দ্বিতীয় শ্রেণির আঁখিসহ ১৫ জন অসুস্থ হয়। এদের অনেকে স্কুলের কাছে খোলা দোকানে আচার ও ঝালমুড়ি খেয়েছিল। এ কারণে অসুস্থ হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।এ দিকে, সন্তানদের হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে ছুটে আসেন অভিভাবকরা।অভিভাবক কামরুল, হাসান আলী ও সাজেদা বেগম জানান, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসি। প্রাথমিকভাবে আচার বা চানাচুর খেয়ে তারা ফুড পয়জনিংয়ে ভর্তি হয়েছে বলে জানান তারা। পরে খবর নিয়ে জানতে পারি এদের মধ্যে কেউ কেউ আচার-চানাচুর না খেয়েও অসুস্থ হয়েছে। ভয়ে বা আতঙ্কে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে সন্দেহ করা হতে পারে।নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মাস সাইকোজেনিক ইলনেস কিংবা ফুড পয়জনিং এর কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে পারে। আমাদের মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। একজনকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে.কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আল আমিন মাসুদ জানান, অসুস্থ একজনকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ রওশন কবীর জানান, অসুস্থ সকলেই চানাচুর বা আচার খায়নি। একজনের অসুস্থ হওয়ার পর তার অবস্থা দেখে অন্যরা সাইকোজেনিক ইলনেসের কারণে অসুস্থ হতে পারে। আচার ও ঝালমুড়ি বিক্রেতা ইমান আলীকে নিয়ে কথা ওঠায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।