চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে তিনশ মিটার রাস্তার সংস্কার চায় এলাকাবাসী
এস এম সাখাওয়াত শনিবার ভোর ০৪:৪৩, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪
অভিভাবকহীনতায় দীর্ঘ দিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পারাপারে যারপর নেই কষ্ট করছেন জেলাবাসী। পৌর এলাকার পশু হাসপাতাল মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নাকি জেলা পরিষদের এই দ্ব›েদ্ব অভিভাবকহীন অবস্থায় থমকে আছে এর সংস্কার কাজ। তবে রাস্তা যেই প্রতিষ্ঠানর অন্তর্গত হোক না কেন এলাকাবাসী অতি দ্রুত এর সংস্কার চান।
জানা গেছে, পৌর এলাকার পশু হাসপাতাল মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত সড়কটির আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৩৩০ মিটার। যার সর্বশেষ সংস্কার কাজ করা হয়েছিল এক যুগ আগে। অর্থাৎ প্রায় ১২ বছর আগে সংস্কারের পর আর কোনো উদ্দ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে সময়ের সাথে সাথে রাস্তাটির অবস্থা এখন চরম বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সদর উপজেলা থেকে গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলার প্রবেশদ্বার জনবহুল পশু হাসপাতাল মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত এই সড়কটি বছরের পর বছর মেরামত না হওয়ায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এদিকে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টি কিংবা সড়কের উভয় ধারে গড়ে ওঠা দোকান থেকে ফেলা পানিতে সড়কটিতে জমে নষ্ট হয়েছে এর কার্যক্ষমতা। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
সড়কটির একপ্রান্তে যেমন রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয়, জেলা ও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ও নেসকোর বিতরণ বিভাগ-১-২ কার্যালয়, অন্যপ্রান্তে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা কার্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি, ফায়ার সার্ভিস উপ-সহকারী পরিচালকের কার্যালয়। এছাড়া সড়কটির উভয় পাশে রয়েছে মার্কেট, কাঁচা বাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসি, চালের আড়ৎসহ বিভিন্ন প্রকারের প্রায় দুই শতাধিক দোকান। এদিকে জেলার গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট উপজেলাসহ সদরের আমনুরা এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়েই যাতায়াত করেন। কিন্তু তারপরও সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ এলাকাবাসী ও পথচারীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটিতে বাস-ট্রাকের যাতায়াত কিছুটা কম হলেও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেলের যাতায়াত বেশি। আর তাই রাস্তাটিতে যাতায়াতের সময় অটোরিকশার যাত্রীরা দূর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাতায়াত করেন এই অভিভাবকহীন রাস্তা দিয়ে। তবে সবচেয়ে বড় দূর্ভোগে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ডায়াবেটিকস রোগীরা। এছাড়া রাস্তাটির পাশে যাদের দোকান আছে তাদেরও চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হয় ধূলোবালির কারণে।
অটোরিকশা চালক ইব্রাহিম বলেন, শহরের মধ্যে প্রবেশের এটাই একমাত্র রাস্তা। অথচ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। কেও এর দায়িত্ব নিতে চাইনা। রাস্তায় এতো গর্ত আর ভাঙ্গা আছে যে প্রায় প্রতিদিনই অটোগাড়ী মেরামতে অর্থ ব্যয় করতে হয়। কারণ এই রাস্তা দিয়ে যাবার সময় অনেক সময় গাড়ির নাট-বল্টু খুলে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দোকান দেয়ার পরে থেকে রাস্তার কোন প্রকার সংস্কার দেখতে পাইনি। শহরের খুবই ব্যস্ততম সড়কগুলির একটি এই সড়ক। কারণ এখানে কয়েকটি সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ বাজার, চালের আড়ৎ আছে। শহরে প্রবেশ করতে গেলে এই রাস্তায় ব্যবহার করতে হবে। অথচ বছরের পর বছর ধরে রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এতে দূর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের। অনেক সময় অটোরিকশা চালকরা এদিকে আসতে চান না। ফলে মালামাল নিয়ে আসতে ও বিক্রি করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে জেলা পরিষদ নাকি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা এর সংস্কার করবে তা আমাদের জানা নেই।
তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তৌফিকুল ইসলাম বলনে, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকায় পথচারীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার জায়গাটি পৌরসভার মধ্যেই পড়ে। যার কারণে আমরা এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আর জেলা পরিষদের কাছে পাঠানো অনাপত্তিপত্র পেলে দ্রæতই এই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।