ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ শনিবার রাত ০১:৪৪, ৬ নভেম্বর, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শহরের শহীদ মঞ্জু সড়ক এলাকায় নিজ বাসায় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ান। গত রোববার (৩১ অক্টোবর) ওই ছাত্রী শিক্ষক রফিকুলের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। এসময় শিক্ষক রফিকুল ওই ছাত্রীর শরীর ঘেঁষে বসে তার সাথে অনৈতিক আচরণ করেন। পরে ওই ছাত্রী বাসায় ফিরে পরিবারকে ঘটনা জানালে তার বাবা ওইদিনই বিচার চেয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে ২০১৫ সালের মার্চে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। ওই বছরই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির অপর এক ছাত্রীর সাথে ওই শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অশালীন আচরণ করায় ওই ছাত্রীর বাবা বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে মেয়েকে অন্যত্র ভর্তি করান।
এছাড়াও ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রশপত্র ফাঁসের অভিযোগে রফিকুলের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিনি পার পেয়ে যান।
উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া ইসলাম ডলি বলেন, ২০১৫ সালে সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করায় তার বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। ওই সময় যদি কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিত আজ এই ধরণের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হত না।
গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজহারুল আনোয়ার ফেরদৌস বলেন, স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনা শোনেছি। এই ধরণের অভিযোগ শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে পূর্বেও উঠেছিল। এসব ঘটনায় বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও বিব্রতবোধ করছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরণের অভিযোগ শুনা গেছে। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে পত্র দেয়া হয়েছে।