আফগানিস্তানকে টেনেটুনে হারিয়ে এখন শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে অস্ট্রেলিয়া
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০৮:০৪, ৪ নভেম্বর, ২০২২
১৮ বলে ৪৯ রান থেকে ২ বলে ১১ রান—রশিদ খানের ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের এতটাই কাছে চলে গিয়েছিল আফগানিস্তান। নিজের ‘ঘরের মাঠ’ অ্যাডিলেডে রশিদ আফগানদের শেষ পর্যন্ত জেতাতে পারেননি, তবে অস্ট্রেলিয়াকে ঠিকই ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার।
৪ রানে জিতে সেমিফাইনালের স্বপ্নটা টিকে থাকল অস্ট্রেলিয়ার, তবে শেষ চারে যেতে এখন আগামীকাল ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। সেখানে ইংল্যান্ড জয় না পেলেই শুধু সেমিফাইনালে যাবে এখনকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অস্ট্রেলিয়ার জয়ে অবশ্য শেষ হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার সেমিফাইনাল-স্বপ্ন। কাল ইংল্যান্ডকে হারালেও তাদের পয়েন্ট হবে ৬, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট ৭ করে।
সেমিফাইনালের সমীকরণ নিজেদের পক্ষে আনতে আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারাতে হতো অস্ট্রেলিয়ার। কঠিন সমীকরণের ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৩২ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া তোলে ১৬৮ রান। নিউজিল্যান্ডের রানরেট তাদের নাগালের বাইরে চলে যায় তখনই।
ইংল্যান্ডের চেয়ে রানরেটে এগিয়ে যেতে হলে আফগানিস্তানকে আটকে রাখতে হতো ১০৬ রানের মধ্যে। তবে সেটা আর করতে পারেননি জশ হ্যাজলউডরা। শেষ দিকে রশিদের ঝড়ের পরও আফগানরা থেমেছে ১৬৪ রানে।
অর্থাৎ আগামীকালের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুধু জয় পেলেই চলবে ইংল্যান্ডের। তবে শ্রীলঙ্কা জিতলে শেষ চারে খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
অ্যাডিলেডে বাঁচা–মরার লড়াইয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে অস্ট্রেলিয়া পায়নি তাদের নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেন ম্যাথু ওয়েড। চোটের কারণে ছিলেন না টিম ডেভিডও। বাদ দেওয়া হয় মিচেল স্টার্ককে, তাঁর জায়গায় খেলেন কেইন রিচার্ডসন।
তিন পরিবর্তন নিয়ে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চের জায়গায় এদিন ওপেন করেন গত ভারত সফরে নজর কাড়া ক্যামেরন গ্রিন। বিশ্বকাপে জস ইংলিসের বদলি হিসেবে জায়গা পাওয়া গ্রিন আজই প্রথমবার একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন, যদিও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না। ফিরে গেছেন ৩ রানে।
তবে পুরো বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার এদিন বড় রান করার ইঙ্গিত দিয়েও আউট হয়েছেন ২৫ রানে। রান পাননি দলে ফেরা স্টিভেন স্মিথও। স্মিথ ও ওয়ার্নার দুজনকেই ফেরান নাভিন-উল-হক।
২২ রানে একবার জীবন পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি মিচেল মার্শ। মুজিব-উর-রেহমানের বলে ৪৫ রানে আউট হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বিপক্ষে ঝড় তুলেছিলেন মার্কাস স্টয়নিস। রশিদ খানের বিপক্ষে আজ তেমন কোনো ঝড় দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তবে আজকের এ লড়াইয়ে স্টয়নিস নয়, জিতেছেন রশিদ। অবশ্য রান পেয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁর ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৩২ বলে ৫৪ রানের ইনিংসেই বড় ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা কিছুটা জাগিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
সে জন্য অবশ্য শুরুতেই উইকেট দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। সে কাজটা করেছিলেনও হ্যাজলউড। উসমান গণিকে ফেরান তৃতীয় ওভারেই। তবে আরেক ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ অন্য পাশে ঝড় তোলেন, রিচার্ডসনের বলে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৬ বলে ৩০ রান।
ইব্রাহিম জাদরান ও গুলবদিন নইবের ৪৬ বলে ৫৯ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। তবে অ্যাডাম জাম্পার করা ১৪তম ওভারে ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত থ্রোতে জাদরান রানআউট হলে ছন্দপতন ঘটে আফগানিস্তানের। ওই ওভারেই তারা হারায় আরও ২ উইকেট। ৯৯ রানে ৩ উইকেট থেকে আফগানরা পরিণত হয় ১০৭ রানে ৬ উইকেটে। রশিদ এরপর উল্টো ধাক্কা দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে, তবে পার করাতে পারেননি।