আদমদীঘিতে ৩ বছর ধরে বন্ধ আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ, যানবাহন ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ
মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি (বগুড়া) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ০৭:১২, ২০ আগস্ট, ২০২০
বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের আদমদীঘি উপজেলার মুরইল থেকে সান্তাহার বশিপুর বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে গত ৩ বছর ধরে। বিকল্প না থাকায় চলাচল অযোগ্য সড়কটি ব্যবহার করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সকল ধরণের যানবাহন ও পথচারীরা।
জানা গেছে, এই আঞ্চলিক মহাসড়ক চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ার কারনে এবং লেন বৃদ্ধি করার জন্য নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। বগুড়া চারমাথা থেকে আদমদীঘি উপজেলার পূর্বাংশ মুরইল জয় ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ করার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশন ওই স্থান থেকে পশ্চিমে বশিপুর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ অজ্ঞাত কারণে বন্ধ রেখেছে। আদমদীঘির শিবপুর নামক স্থানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইড অফিস ও ডকইয়ার্ড থাকলেও সেখান থেকে সড়ক নির্মাণ কাজ কেন বন্ধ রেখেছেন তার জবাব মিলছে না।
এই দীর্ঘ ৯ কিলোমিটারের পুরো অংশ জুড়ে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় খানা-খন্দে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ৩ বছরে চলাচল অযোগ্য সড়কে দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ডজনখানেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে বহু মানুষকে। নিত্যদিন খানা-খন্দে উল্টে গিয়ে না হয় আটকে গিয়ে বিকল হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পরে থাকে পণ্য বা যাত্রীবাহী ট্রাক, বাস, ট্রাক্টর, সিএনজি চালিত অটোটেম্পুসহ নানা যান্ত্রিক বাহন। এ সময় যে যানজটের সৃষ্টি হয় তা স্বচক্ষে না দেখলে বোঝানো কঠিন। যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের নিষ্ফল অভিযোগ চলতে থাকে ক্রমাগত।
এদিকে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত ৩ বছর ধরে এই ৯ কিলোমিটার অংশের বড় বড় খানা-খন্দ আর গর্তে যে পরিমান আস্ত ইট ফেলে জোড়াতালি দিয়ে টাকার অপব্যয় করেছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন সে টাকায় রাস্তা নির্মান করা সম্ভব হতো। বর্তমানে অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে, জোড়াতালি দেওয়ার মত অবস্থাও নেই। জোড়াতালি দিলেই তা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে এই সড়কে চলাচলকারিদের মন্তব্য যে, বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য বাধ্য করার পরিবর্তে জোড়াতালি দিতে বেশী আগ্রহী। এতে করে তাদের পকেট ভারি করতে বেশী সুবিধা হচ্ছে। আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর, কুন্দুগ্রাম এবং নসরতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং এ সড়কে চলাচলকারি সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবী, গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষক ও সচেতন সাধারণ মানুষ দোষারোপ করেছেন সওজ কর্তৃপক্ষকে। তাঁরা বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তাদের ব্যর্থতার কারণেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজে গাফিলতি করছে।
এ বিষয়ে বগুড়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন জনভোগান্তি এবং প্রতিনিয়ত ঘটনা-দুর্ঘটনার বিষয়টি আমাদেরকেও ভাবিয়ে তুলেছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশনকে বাতিল এবং কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র লেখা হয়েছে ২৭ জুলাই। সে হিসাবে চলতি মাসের শেষ দিকে ঠিকাদার বাতিল এবং নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা হবে।