অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে নদীর পাড়ের বালু চুরির সময় প্রাণ গেলে শ্রমিকের
শাকিল হোসেন শওকত,নাগরপুর,টাঙ্গাইল শুক্রবার রাত ১০:৫৬, ২২ জানুয়ারী, ২০২১
টাঙ্গাইলের নাগরপুর অবৈধ ট্রাক্টরে মাটি তুলতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের শালিয়াড়া গ্রামের এক মাটি ট্রাক্টর (ট্রলি) শ্রমিক নিহত হয়েছে।
২২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মাটি চুরি করে বিক্রি করার সময় এ ঘটনাটি ঘটে। সে ওই গ্রামের সালাম মিয়ার ছোট ছেলে মো. আকাশ মিয়া (১৮)। সন্ধ্যা পর্যন্ত শেষ খবর পাওয়া যায়, ময়না তদন্ত ছাড়ায়ই লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নাগরপুর উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের শালিয়াড়া নদীর পাড়ে রাত দিন ২৪ ঘন্টা অবৈধ ভাবে ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক্টর দিয়ে দেদারছে মাটি চুরি করে বিক্রি করছে এক দল বালু দস্যু। কিছু দিন আগে উপজেলা প্রশাসন এসে মাটি কাটা বন্ধদের নির্দেশ দিলে, কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর আবারও মাটি খেকোরা রাতে আধারে মাটি কাটা শুরু করে। এছাড়াও জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও পরিস্থিতি থেকে যায় অপরিবর্তিত। সর্ব শেষ এর বাস্তব চিত্র নিয়ে গতকাল ২১ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলার বেকড়া ইউনিয়নের মাটি কাটার উপর দুটো ফেইসবুক লাইভ করেন স্থানীয় এক সংবাদ কর্মী।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মাটি চুরি করার সময় উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের শালিয়াড়া গ্রামের মাটি কাটার শ্রমিক আকাশ ওই দিন ভোরে বাদলের ট্রলিতে নদীর পাড় থেকে মাটি তুলছিলো। নদী পাড়ের মাটি উত্তোলনের সময় নদীর পাড়ের মাটির একটি বড় চাপ ভেঙ্গে পড়ে আকাশের উপর। এ সময় অন্যান্য শ্রমিকরা মাটি সরিয়ে আকাশকে মাটির স্তুপের নীচ থেকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে, কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রেরন করে। ঢাকা নেয়ার পথেই আকাশ রাস্তায় বমি করলে তার অবস্থা আরো খারাপ দিকে যায়। আকাশকে ঢাকা উত্তয়ার একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই সে মারা যায়। আকাশের লাশ নিয়ে পরিবার গ্রামের বাড়ীতে ফিরে আসেন। ছেলের লাশ দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে মা।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে, এলাকার প্রভাবশালীরা মৃত দেহ বাড়ীর উঠানে রেখে দফায় দফায় শালিশে বসে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৪টা) লাশ নিয়ে কথিত শালিশে চলছে দরকষাকষি। ঘটনার পর থেকে ট্রাক্টরের মালিক বাদল মিয়া পলাতক আছে, বলে এলাকাবাসী জানায়।
এ ব্যাপারে নাগরপুর থানার উপরিদর্শক এস আই ফজলুল হক ফজলু বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, লাশের সুরুতহাল রিপার্ট প্রস্তুত করি। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায়, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।