ঢাকা (বিকাল ৫:০৯) রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি বাঁধগুলো এখনো সংস্কার হয়নি, দুর্ভোগে উপকূলবাসী

ভোলা জেলা ২১৭৮ বার পঠিত

কামরুজ্জামান শাহীন কামরুজ্জামান শাহীন Clock বুধবার বিকেল ০৪:১৬, ১৭ জুলাই, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ভোলায় প্রায় ৯ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেড় মাস হলেও এসব বাঁধ এখনো সংস্কার করা হয়নি। ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে দিনে দু’বার জোয়রের পানি প্রবেশ করছে ওই এলাকাগুলোতে। জেলার ৭ টি উপজেলায় প্রায় ২০ গ্রামের ১০-১৫ হাজার মানুষকে প্লাবনের মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

 

ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ভোলা সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর বেশ কয়েকটি স্থান দিয়ে পানির স্রোতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেসব স্থানে এখনো সংস্কার না হওয়ায় দিনে দুবার জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবনের মধ্যে পড়তে হয় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মধ্যে পরতে হয় চরফ্যাশন ও মনপুরার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষকে। সেখানকার ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ি বাঁধগুলো এখনো সংস্কার করা হয়নি।

মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, ঘূর্ণিঝড়ে পানির চাপে বাঁধের চারটি পয়েন্ট ভেঙ্গে গেছে। ইউনিয়নের দক্ষিণ সাকুচিয়া ও রহমানপুর গ্রামসহ ২, ৩, ৫, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড জোয়ারে প্লাবিত হয়। বাঁধগুলো সংস্কার না করায় এখনো দিনে দুবার এলাকাগুলো জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। তার ইউনিয়নে দুই-তিন হাজার মানুষকে বসবাস করতে হয় পানির মধ্যেই।

 

এছাড়া উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনারচর ও চরযতিনের প‚র্ব পাশে বেড়িবাঁধ সম্প‚র্ণ ভেঙ্গে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার জানান, প্রায় আধা কিলোমিটারের ওপরে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। প্রায় ৮ হাজার মানুষ এখনো জোয়ারের সময় পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ও কুকরিমুকরি, হাজারীগঞ্জ, ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধগুলো এখনো সংস্কার করা হয়নি। এসব অ লের মানুষ দিনে দুবার জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত থাকে।

 

ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার জানান, ইউনিয়নটির অধিকাংশই স্থানেই বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। বর্তমানে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা বেড়ে গেছে।

কুকরি মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল হাশেম মহাজন বলেন, এমনিতেই ইউনিয়নটির বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ নেই, যেটুকু রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙ্গা স্থান দিয়ে জোয়ারের সময় পানি প্রবেশ করছে। শিগগিরই বাঁধ সংস্কার না করলে সামনের দিনগুলোয় মানুষ আরো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়বে।

 

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভোলার উপজেলায় প্রায় ৯ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১-এ ৪ কিলোমিটার, ডিভিশন-২-এ ৫ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মনপুরা। সেখানে প্রায় ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ উপজেলায় ১২টি পয়েন্ট দিয়ে বাঁধ ভেঙ্গে ৮-১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

 

এ ব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান মাহমুদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার আওতাধীন ৪ টি উপজেলায় ৫ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২০০ মিটারই হলো মনপুরা উপজেলায়। এ উপজেলায় ১২টি পয়েন্ট দিয়ে ১৬৫ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। বাঁধগুলো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাঁধ সংস্কার করা হবে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, তার আওতাধীন ৩ টি উপজেলায় প্রায় ৪ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়া বাঁধ সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT