রাজধানীতে ৩-৪ ঘণ্টা লোড শেডিং, বাইরের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার সকাল ১০:১৮, ২ অক্টোবর, ২০২২
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোড শেডিং আবার বেড়েছে। প্রায় আড়াই মাস আগে সূচিভিত্তিক লোড শেডিংয়ের কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সূচি যেন ভেঙে পড়েছে। রাজধানীতেও দিনে-রাতে যখন-তখন লোড শেডিং হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় তিন-চার ঘণ্টাও লোড শেডিং হচ্ছে। রাজধানীর বাইরের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে দিনে ছয়-সাত ঘণ্টার বেশি লোড শেডিং হচ্ছে। ফলে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। গরম মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। জনজীবন হচ্ছে বিপর্যস্ত।
জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য গত ১৯ জুলাই থেকে সারা দেশে দিনে একবার এক ঘণ্টা লোড শেডিং করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সেপ্টেম্বর থেকে কেটে যাবে লোড শেডিং। এরই মধ্যে চলে গেছে সেপ্টেম্বর। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো বলছে, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই একাধিকবার লোড শেডিংয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাসসংকটের কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রগুলো থেকে পুরোপুরিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও পুরোপুরি চালানো যাচ্ছে না, যার কারণে চাহিদার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি বাড়ছে।
রাজধানীতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) এবং ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি (ডিপিডিসি) এই দুটি প্রতিষ্ঠান। গতকাল শনিবার প্রতিষ্ঠান দুটির ওয়েবসাইটে দেখা যায় এলাকাভিত্তিক লোড শেডিং সূচিতে দু-তিন বার করে উল্লেখ আছে। যদিও সূচির বাইরেও লোড শেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাওসার আমীর আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাধ্য হয়েই লোড শেডিংয়ের শিডিউল বাড়াতে হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন আগের তুলনায় কিছুটা কমানো হয়েছে, যার কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ’
দেশের বৃহত্তর বিতরণ কম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিতরণ এলাকায় সবচেয়ে বেশি লোড শেডিং হচ্ছে। আরইবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা তো চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। যার কারণে লোড শেডিং বাড়াতে হচ্ছে। এখন সন্ধ্যার দিকে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। ’
চট্টগ্রামের পরিস্থিতি : দশ দিন ধরে লোড শেডিংয়ে নাকাল চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্রাহকরা। প্রতিদিন দু-একবার লোড শেডিং হওয়ার কথা থাকলেও গত কয়েক দিনে চার-পাঁচবারও বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। চট্টগ্রামে কিছুদিন ধরে কমবেশি ২৫০ মেগাওয়াট লোড শেডিং হচ্ছে বলে জানালেন পিডিবি কর্মকর্তারা। হালিশহর আবাসিক এলাকার গ্রাহক জমির উদ্দিন বলেন, ‘দিনরাতে চার-পাঁচবার লোডশেডিং হচ্ছে। গত দুই-তিন বছরে এমন লোড শেডিং দেখা যায়নি। ’