আসামী পুলিশ কর্মকর্তার ভাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ রবিবার রাত ০২:৩২, ২০ মার্চ, ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতারণার মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার আসামী পুলিশ কর্মকর্তার ভাই হওয়ায় মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে এক পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া ওই মামলার বাদিদের নামে ঢাকায় পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা। শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগিরা।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর এলাকার নামোপাড়া মহল্লার নাইমুল হক। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়নের দাতা সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেজাউল ইসলাম রেজা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা মো.মিজানুর রহমান, রেজার বন্ধু কবির, বিউটি ও জেসি এলাকার কয়েকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে জানায় যে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে যা মানুষের মাঝে সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে। কিন্তু অর্থ ছাড় করতে আরো কিছু খরচ হবে। তাই যারা ছাড়ের অর্থ দিবে কেবল তাদের মধ্যেই টাকাগুলো ভাগ করে দেয়া হবে।
এরই ফলশ্রুতিতে মিষ্টি মিথ্যা কথায় প্রভাবিত হয়ে এলাকার দুরুল, মাসুম, কামাল ও রুবেলসহ কয়েকজন ৫০ জনের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা তুলে ওই প্রতারক চক্রের কাছে দিয়ে সর্বশান্ত হয়। আর তাই কৌশলে অর্থ সহায়তা দেয়ার নামে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ও প্রতারক চক্রের সদস্য বিউটির বাবা আনারুল ও মা সেমালি বেগমের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে চারটি (সিআর-৬১৫/২১, ১৫/২২, ৬২/২২ ও জিআর ১১৮/২১) মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগীরা।
কিন্তু এ চক্রের প্রধান আসামী রেজাউল ইসলাম রেজার আপন ভাই মনিরুল ইসলাম রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা জোনের ডিসি হিসেবে কর্মরত থাকায় সিআইডির এসআই একেএম ফজলুর রহমান প্রতারক চক্রের অন্যতম আসামি রেজাউল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মো. কবির ও জেসিকে বাদ দিয়ে আদালতে মনগড়া মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এমনকি এজাহার নামীয় আসামিদের জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণাদি সংগ্রহ করে তদন্ত কর্মকর্তাকে দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তাদের বাদ দিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি।
এদিকে মনিরুল ইসলামের প্রভাবের কারণে করা তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দাখিল করলে শুনানী শেষে উচ্চতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হলেও সেখানে আসামি রেজাউল ইসলাম রেজার ভাই মুনিরুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ভূক্তভোগীরা ।
আর তাই সকল প্রকার প্রভাবের কারণে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা প্রতারকদেও বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু বিচার ও তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতির জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মাসুম, কামাল ও রুবেলসহ প্রতারণার শিকার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।