ধর্মপাশায় হযরত মজুন শাহ নূরী মাজারের মােতােয়াল্লীর সংবাদ সম্মেলন
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) শনিবার রাত ১০:১৮, ২ অক্টোবর, ২০২১
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আতকাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ন্যাংটা বাবা (হযরত মজুন শাহ নূরী) মাজারের চলমান দুই পক্ষের মধ্যে নানা বিরোধের প্রতিবাদে এক পক্ষের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (২অক্টোবর) শনিবার বিকাল ৪টার দিকে ধর্মপাশা হাসপাতাল রোডস্থ ধর্মপাশা উপজেলা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে ওই মাজারের মোতোয়াল্লী মোঃ বাবুল মিয়া এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। মোঃ বাবুল মিয়া এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমি মােঃ বাবুল মিয়া (৫৮), মাতা মােছাঃ দুলালনেহা ওরফে আছি খাতুন, পিতা মােঃ আশকর আলী, গ্রাম আতকাপাড়া, ডাকঘর ধর্মপাশা, ইউনিয়ন ধর্মপাশা, উপজেলা ধর্মপাশা, জেলা সুনামগঞ্জ। তিনি (দুলামননেছা ওরফে আছিয়া খাতুন) জীবিত থাকা কালীন সময়ে ১৯৭৩ সালের ২১ আগস্ট ২১২৯নং দলিল মুলে আতাপাড়া মৌজাস্থিত আমাদের গ্রামে ৩৫ শতক ভূমি সাফ কবলা সুলে ক্রয় করেন। ১৯৭৪ সালের ৩১মে ১৯৮১নং দলিলমূলে আতকাপাড়া গ্রামে থাকা ন্যাংটা বাবার মাজারের (হযরত মজনু শাহ নূরী) নামে ওই ৩৫ শতক ভূমি আমার মাতা ওয়াকফ আল-আওলল করিয়া দেন।
ওয়াকফ হইতে ইসি নম্বর ১৫৬০০ নং ক্রমিকভুক্ত করে ওয়াকফ মােতায়ল্লী হিসেবে তিনি ওয়াকফ চাঁদা পরিশােধক্রমে সুষ্ঠ সুন্দর ভাবে পরিচালনা করিয়া থাকা কালীন বার্ধক্য অবস্থায় ২০১২ সালের মারা যান।আমার মা মারা যাওয়ায় কিছুদিন মােতায়াল্লী বিহীন অবস্থায় মাজারের কার্যক্রম চলিয়া আসিলে আমি ওই মাজারের মােতােয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার জন্যে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকা বরাবর আবেদন করি।
বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক গত ২০১৮ সালের ১১ডিসেম্বর হইতে চলতি বছরের ২১ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদে আমাকে বিধি মােতাবেক মােতায়াল্পী হিসেবে নিয়ােজিত করা হয়। আমি মােতােয়াল্লী নিয়ােজিত হওয়ার পর বাংলাদেশ ওয়াকক প্রশাসক বরাবর ওয়াকফ চাঁদা পরিশােধক্রমে রসিদ গ্রহণ করিয়াছি। আমাদের গ্রামের মৃত লিলু মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৩), রফিকুল ইসলাম (৩৮), রব্বিীকুল ইসলাম (৩৪),খায়রুল ইসলাম (৩০), জহিরুল ইসলাম(২৫), কামরুল ইসলাম (১৯)। উপরে নাম উল্লেখিত ব্যক্তিগণ ন্যাংটা বাবার মাজার দেখভালো এবং রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্তকালে আমাকে নানা ভাবে গত ২/৩মাস ধরে মাজার পরিচালনার কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিয়া আসতেছে এবং মাজার থকে কারও অনুমতি না নিয়ে তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমতাে মাজারে প্রবেশ করে। এমনকি মাজারে নিয়ে আসা মানত সামগ্রী তারা জোর পূর্বক নিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি (বাবুল মিয়া) আমার পরিবারের লােকজন সহ জান মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর উপরে উল্লেখিত ছয়জন ব্যক্তিকে বিবাদী করে সুনামগঞ্জের সহকারী জজ আদালত ধর্মপাশায় স্বত্বমােকাদ্দমা করি। মামলা নং ১৪৪/২০২১ ইং। এই মামলায় আদালতের বিচারক ১নম্বর থেকে ৬নম্বর বিবাদীর বিরুদ্ধে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা হবেনা তৎমর্মে নােটিশ প্রাপ্তির ১০দিনেরমধ্যে বিবাদীগণকে কারণ দর্শানাের নােটিশ দেওয়া হইলাে। ইতিমধ্যে আপন্তি দাখিল না করা পর্যন্ত উল্লেখিত বিবাদীগণকে নালিশা ভূমিতে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার দ্বারা বাধিত করা হলাে। এই মামলায় আদালত থেকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিবাদীগণকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও তারা সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক মাজার থেকে মাজার উন্নয়নে আসা বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে মাজার উন্নয়ন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মাজারে আসা ভক্তগণের মধ্যে চরম ভীতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে আজ শনিবার মোবাইলে রফিকুল ইসলাম (৩৮) বলেন আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে উপস্থিত ছিলেন ওই মাজারের মোতোয়াল্লী মোঃ বাবুল মিয়ার বোন জামাই মোঃ বারেক মিয়া ও ভাগিনা শাহীনুর। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধর্মপাশা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জুবায়ের পাশা হিমু, সহ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন রানা, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এনাম, যুগ্ম সম্পাদক সেলিম আহমেদ, সিনিয়র সংবাদিক সালেহ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক সোহান আহমেদ, সাংবাদিক মোবারক হোসাইন প্রমুখ।