যৌন হয়রানির অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক অপসারণ
শাকিল হোসেন শওকত,নাগরপুর,টাঙ্গাইল শুক্রবার রাত ০১:০৭, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০
যৌন হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামী টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পচাসারটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ আলীর (৪৫) কে অবশেষে সাময়িক অপসারন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান।
এদিকে ঐ শিক্ষকের কু-প্রস্তাবের একাধিক অডিও ক্লিপস ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে ঐ শিক্ষকের বিচার ও শাস্তির দাবীতে ফুসে উঠে যুবসমাজ সহ এলাকাবাসি।
গত সোমবার তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের।
পরে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সকল সদস্যের উপস্থিতিতে তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। এছাড়াও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় বলে জানা যায়।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্র এবং বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ঐ নারীকে চাপের মুখে এবং অর্থের বিনিময়ে (দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে) রাজী করিয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে সাথে নিয়েই নাগরপুর প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করতে গেলে, সেখানে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন দু’জনেই। তারা সেখানে বলতে চেয়েছেন, বিষয়টি দু’জনেরই ভুল ছিল। এ সব কথা বলে কথার মারপ্যাচ চালাতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তরিঘরি করে সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করেণ তারা।
পাঠকের প্রশ্ন থেকে যায়, ভুলে কিভাবে দিনের পর দিন ফোন আলাপ হয়েছিল? এছাড়াও কেউ কি বিজ্ঞ আদালতে গিয়ে ভুলে মামলা করেন?
প্রসঙ্গত: উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের ভারড়া গ্রামের হত দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রী আ.মোতালেবের স্ত্রী (৩৭) কে চাকুরী দেয়ার সূত্র ধরে তার সাথে ঘনিষ্ঠ হন পচাসারটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ফরহাদ আলী। ওই নারীর দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মোবাইল ফোনে ও সরাসরি প্রতিনিয়ত শারিরিক মিলনের জন্য কু-প্রস্তাব দিতে শুরু করে শিক্ষক ফরহাদ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী গত ০৯ নভেম্বর টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ২১৫/২০২০)। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত সুষ্ঠ তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডি.বি দক্ষিন কে নির্দেশ দেন। তারই প্রেক্ষিতে ঐ শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করা হয়।