ঢাকা (রাত ৯:০২) শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান সানাউল্লাহ হলেন নির্বাচন কমিশনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার, আটক-১ Meghna News নাগরপুরে যদুনাথ স. প্রা. বিদ্যালয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Meghna News দ্রুত সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানাল পরিবার Meghna News সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটের সম্পাদক গরম পানিতে ঝলসে গুরুতর আহত Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাস জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে নিহত একজন Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর আদিবাসী শিশুর মরদেহ উদ্ধার Meghna News মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় যুবক নিহত

২৫ আসনে সীমানা পরিবর্তন

জাতীয় ২১৩৫৮ বার পঠিত

Alauddin Islam Alauddin Islam Clock বুধবার সন্ধ্যা ০৭:২৫, ২ মে, ২০১৮

জাতীয় সংসদের ২৫টি আসনে পরিবর্তন এনে সীমানা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে খসড়া গেজেটে রাজধানী ঢাকার পাঁচটি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিলেও তা থেকে পিছু হটেছে ইসি। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপির আসন পরিবর্তনের প্র্রস্তাব করা হয়েছিল খসড়ায়। চূড়ান্ত তালিকায় তা নেই। আগামী ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এই সীমানায়।

গতকাল সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভায় ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়। সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে ইসির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ৩০০ আসনের সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৭৫টি আসনের ক্ষেত্রে দশম সংসদের সীমানাই বহাল থাকছে। কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে কমিশন আশাবাদী। সময় বাকি মাত্র পাঁচ মাস। এত অল্প সময়ে বড় পরিবর্তন আনলে তা যথাযথ হবে না।

গতকালই সংশোধিত আসন সীমানার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ১৪ মার্চ ৪০টি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করে খসড়া প্রকাশ করে দাবি-আপত্তি আহ্বান করা হয়েছিল। এতে বর্তমান সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপিসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাত শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। গত ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল এসব আপত্তির ওপর শুনানি শেষে ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৫টির আপিল মঞ্জুর করে ইসি।

সীমানা পরিবর্তনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতিবাচক মনোভাব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য ইসি আমলে নিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের সব দাবি নয়; কিছু আপত্তি আমলে নেওয়া হয়েছে।

ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা জানান, পরিবর্তিত ২৫ আসনের মধ্যে রয়েছে- নীলফামারী ৩, ৪, রংপুর ১,৩ ও ৪, কুড়িগ্রাম ৩ ও ৪, সিরাজগঞ্জ ১ ও ২, খুলনা ৩ ও ৪, জামালপুর ৪ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫, সিলেট ২ ও ৩, মৌলভীবাজার ২ ও ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ ও ৬, কুমিল্লা ৬ ও ১০ এবং নোয়াখালী ৪ ও ৫।

খসড়া গেজেটে সিরাজগঞ্জ-১ ও ২ আসনের কোনো পরিবর্তন আনা না হলেও চূড়ান্ত গেজেটে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নকে কেটে সিরাজগঞ্জ-১ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান সীমানায় সদরের চারটি ইউনিয়ন থাকলেও এখন পাঁচটি ইউনিয়ন এই আসনে যুক্ত হয়েছে।

এ আসনের বর্তমান সাংসদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গতকাল রাতে লন্ডন থেকে সমকালকে জানান, ইসির এই সিদ্ধান্ত অসঙ্গতিপূর্ণ ও অযৌক্তিক। কারণ বহুলী ইউনিয়নটি কাজীপুর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে। এমন দূরত্বের একটি ইউনিয়ন তার নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে যুক্ত করার পেছনে অশুভ শক্তির চক্রান্ত রয়েছে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সিরাজগঞ্জ-১ সংসদীয় আসন কাজীপুর

উপজেলার ১২টি এবং সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ সংসদীয় এলাকায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৩ ভোটার থাকার পরও কী কারণে আরেকটি ইউনিয়ন যুক্ত করা হলো- তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে? দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ থেকে এ ইউনিয়নটি কখনই সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সঙ্গে ছিল না। এই আসনে যে ভোটার রয়েছে, নতুন করে আর ভোটারের প্রয়োজন নেই।

তিনি অভিযোগ করেন, সীমানা নির্ধারণে এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাকে জানানো হয়নি। এমনকি কোনো প্রকার গণশুনানি ব্যতিরেকে বহুলী ইউনিয়নকে তার নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় জনগণ এই সিদ্ধান্ত মানবে না।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ মো. হাবিবে মিল্লাত এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মেয়ের জামাই।

এর আগে ইসির খসড়া গেজেটে কেরানীগঞ্জ উপজেলাকে অখণ্ডিত রেখে একটি আসন এবং সাভার উপজেলাকে দুটি আসনে বিভক্ত করা হয়েছিল। এতে ঢাকার-২, ৩, ৭, ১৪ ও ১৯ এ পাঁচটি আসনে রদবদলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। চূড়ান্ত গেজেটে বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে।

খসড়ায় কুমিল্লা জেলার চারটি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হলেও চূড়ান্ত গেজেটে তিনটি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। খসড়ায় দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হলেও চূড়ান্ত গেজেটে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে কুমিল্লা-১ ও ২ আসনে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কুমিল্লা-১ আসনের বর্তমান সাংসদ মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূইয়া। চূড়ান্ত গেজেটে কুমিল্লা-৬ আসনে পরিবর্তন আনা হলেও এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বর্তমান সাংসদ আ. ক. ম বাহাউদ্দীন। এই আসনে আদর্শ সদর উপজেলার সঙ্গে সিটি করপোরেশন এবং সেনানিবাস এলাকা যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে কুমিল্লা-১০ আসনে রাখা হয়েছে সদর দক্ষিণ উপজেলা, লালমাই উপজেলা এবং নাঙ্গলকোট উপজেলা। কুমিল্লা-১০ আসনের বর্তমান সাংসদ পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ ছাড়াও খসড়া গেজেটে নীলফামারীর-৩ আসনে জলঢাকা উপজেলার সঙ্গে কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি, বড়ভিটা ও পুটিমারী ইউনিয়ন সংযুক্ত থাকলেও তা বাদ দিয়ে চূড়ান্ত গেজেটে শুধু জলঢাকা উপজেলা নিয়ে নীলফামারী-৩ এবং কিশোরগঞ্জ পুরো উপজেলা নিয়ে নীলফামারী-৪ আসন গঠন করা হয়েছে।

রংপুর জেলার তিনটি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-১ আসনের সঙ্গে রংপুর সিটি করপোরেশনের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে রংপুর সদর উপজেলার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের বাকি সব ওয়ার্ড যুক্ত করে রংপুর-৩ আসন গঠন করা হয়েছে। পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা নিয়ে রংপুর-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। বিদ্যমান সীমানায় রংপুর-৪ আসনের মধ্যে সিটি করপোরেশনের কিছু অংশ যুক্ত থাকলেও এখন তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামের দুটি আসনে পরিবর্তন করা হয়েছে। উলিপুর উপজেলা নিয়ে কুড়িগ্রাম-৩ এবং রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী উপজেলা নিয়ে কুড়িগ্রাম-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। বিদ্যমান সীমানায় উলিপুরের সাহেবের আলগা ইউনিয়ন রয়েছে ৪ আসনের সঙ্গে। অন্যদিকে চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ও নয়ারহাট ইউনিয়ন ছাড়া বাকি অংশ রয়েছে ৩ আসনের সঙ্গে। নতুন সীমানায় উপজেলা ইউনিটকে অখণ্ড রাখা হয়েছে।

খুলনা জেলার দুটি আসনে পরিবর্তন করা হয়েছে। ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে প্রাধান্য দিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সঙ্গে দিঘলিয়া উপজেলার আড়ংঘাটা ও যোগীপাল ইউনিয়নকে যুক্ত করা হয়েছে খুলনা-৩ আসনে। কারণ এই দুটি ইউনিয়ন দিঘলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া আড়ংঘাটা ও যোগীপাল ছাড়া দিঘলিয়ার বাকি অংশ, রূপসা ও তেরখাদা উপজেলা নিয়ে খুলনা-৪ আসন গঠন করা হয়েছে।

জামালপুরের দুটি আসনে পরিবর্তন করা হয়েছে। সরিষাবাড়ী নিয়ে জামালপুর-৪ আসন এবং সদর উপজেলা নিয়ে জামালপুর-৫ আসন গঠন করা হয়েছে। বিদ্যমান সীমানায় সদর উপজেলার মেষ্টা ও তিতপল্লা ইউনিয়ন সরিষাবাড়ীর সঙ্গে যুক্ত ছিল।

নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন ছাড়া সদর উপজেলার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বন্দর উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের ১১ থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সঙ্গে সদর উপজেলার আলীরটেক ও গোগনগর যুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠন করা হয়েছে।

সিলেট-২ ও ৩ আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান সীমানায় বিশ্বনাথের সঙ্গে বালাগঞ্জের তিনটি ইউনিয়ন ছিল। নতুন সীমানায় বিশ্বনাথের সঙ্গে নবগঠিত ওসমানীনগর উপজেলা যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে সিলেট-৩ আসনে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জকে যুক্ত করা হয়েছে।

মৌলভীবাজারের দুটি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। মৌলভীবাজার-২ আসনে বর্তমানে কুলাউড়ার সঙ্গে কমলগঞ্জ উপজেলার আংশিক থাকলেও এখন তা বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু কুলাউড়া নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন এবং শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা নিয়ে মৌলভীবাজার-৪ আসন গঠন করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমানে জেলার নবীনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন বাদে বাকি অংশ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসন গঠিত হলেও নতুন সীমানায় পুরো নবীনগরকে একত্র করা হয়েছে। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসন শুধু বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নিয়ে গঠন করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলাতেও দুটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নোয়াখালী-৪ আসন গঠন করা হয়েছে সুবর্ণচর ও সদর উপজেলা নিয়ে। বিদ্যমান সীমানায় সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন নেয়াজপুর ও অশ্বদিয়া নোয়াখালী-৫ আসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখন শুধু কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসন গঠন করা হয়েছে। এই আসনের বর্তমান সংসদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এর আগে ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দশম সংসদের সীমানা বহাল রাখার দাবি করে; অন্যদিকে বিএনপি ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানায়। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। দশম সংসদে ছয়টি নীতিমালা অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT