৫ তরুণের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে সুরিয়া নদীর উপর সেতু
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ রবিবার রাত ১০:০৮, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
এদেশে আগের মতো স্বেচ্ছাশ্রম আর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ তারুণ্য খুবই কম দেখা যায়। তবুও এ মাটির সন্তানেরা দেশের বিভিন্ন সংকট আর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ৪ তরুণ এলাকার মানুষের দুর্দশা লাঘবে নিচ্ছেন সেতু নির্মাণের প্রস্তুতি। যেখানে জনপ্রতিনিধিরা চেয়ে থাকেন কেবল সরকারি বরাদ্দের উপর সেখানে স্থানীয় তরুণেরা ব্যক্তি উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেতু নির্মাণের মতো কাজে হাত দিয়েছেন।
সরেজমিনে রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) গিয়ে দেখা যায়, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম মাওহা নয়ানগর বাউশালী পাড়া ও নেত্রকোনার সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের দুগিয়া গ্রামের মাঝখানে সুরিয়া নদী, যার প্রস্ত হচ্ছে ৭০ মিটার। সুরিয়া নদীর উপর কোন সেতু না থাকায় দুই জেলার ১০/১২ গ্রামের মানুষ খুবই কষ্ট করে পায়ে হেঁটে পানিতে ভিজে নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করে। বর্ষাকালে খেয়া পারাপারের মাধ্যমে দুই পাড়ের এলাকাবাসীদের চলতে হয়। সেতুটি নির্মাণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই নদীর দুই পাড়ের শুকনো স্থানে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে সংযোগ সড়ক তৈরী করেছে।
এ বিষয়ে সেতু নির্মানের উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ক আজহারুল করিম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত নদী পারাপারের সমস্যার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যকে অবহিত করে আসছি। তারা এ নদীর উপরে এখন পর্যন্ত কোন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। পরে বাউশালী গ্রামের মঞ্জুরুল হক, খলতবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ কামাল হোসেন, সোহেল রানা ও জামালকে নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছি বাঁশ-কাঠ দিয়ে সেতুটি নির্মাণের। এই নদীটির দুই পাড়ে ময়মনসিংহ অংশে লাল মিয়ার জমি ও নেত্রকোনা অংশে বিদ্যা মিয়া ও আব্দুর রশিদের জমি রয়েছে। তারা তাদের উক্ত জায়গা সেতু নির্মাণের সংযোগ সড়ক তৈরীতে দিয়ে দিয়েছেন। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৫ লাখ টাকা। নদীর দুই পাড়ে বসবাসরত গ্রামবাসীদের নিয়ে সাহস করেছি সেতু নির্মাণ করে জনসাধারণের অসুবিধা দূর করার জন্য। আমাদের এ কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ সদস্য ও গৌরীপুর প্রেসক্লাবের আহবায়ক এইচএম খায়রুল বাসার।
এসময় তিনি সেতুটি সুষ্ঠুভাবে নির্মাণের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা প্রতাশা করেছেন।
এ বিষয়ে নদীপাড়ের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পর ধারণা ছিলো এই নদীর উপর সেতু নির্মাণ হবে। কিন্তু এতো বছরেও নদীটির উপর সেতু নির্মাণ না হওয়া দুঃখজনক। এখন এলাকার এই তরুণরা মিলে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে যা খুবই আনন্দের।
আঃ খালেক বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাদের এই ছেলেদের উদ্যোগে সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে এতে এলাকাবাসী উচ্চসিত। আমরা এলাকাবাসী সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি।
নদীর ঐ পাড়ের দুগিয়া গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, এই নদীটি দুই জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় সেতুটি নির্মাণে জটিলতা। আমরা এই উদ্যোগের একমত পোষণ করেছি।
একই এলাকার জজ মিয়া ফকির বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে দুই জেলার মানুষের চলাচলে সুবিধা হবে। এলাকার শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াতে সুবিধা হবে পাশপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য ও দুই জেলার মানুষের মধ্যে অটুট বন্ধন তৈরী হবে।