১৯ ঘন্টা পর সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
ইবাদুর রহমান জাকির,সিলেট রবিবার দুপুর ০২:৪৩, ৮ নভেম্বর, ২০২০
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে প্রায় ১৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সিলেট-ঢাকা এবং সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
দুর্ঘটনাকবলিত সাতটি ট্যাংকারে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরারতের পর আজ রবিবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার (গ্রেড-১) মো. আফছার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আফছার উদ্দিন বলেন, আখাউড়া থেকে বগিমেরামতকারী ইঞ্জিন এসে লাইনের ওপর ছিটকে পড়া ট্যাংকারগুলো সরিয়ে ট্রেনলাইন মেরামতের পর আজ রবিবার সকাল ৮টায় পুনরায় চালু হয়েছে ট্রেন চলাচল।
উল্লেখ্য : মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও এলাকায় ট্রেনের ইঞ্জিনসহ তেলের ওয়াগনবাহী ৭টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিস্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় শনিবার দুপুর থেকে সিলেটের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। চলে উদ্ধার কাজ।
জানা গেছে, মৌলভীবাজার ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গটন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আগামী ৭ দিনের ভেতর এই তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট দেবে। বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ঢাকা) মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে এই কমিটিতে আছেন বিভাগীয় প্রকৌশলী (ঢাকা) সুলতান আলী, বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (ঢাকা) আবু হেনা, বিভাগীয় প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) রেজাউল করিম ও বিভাগীয় যন্ত্র প্রকৌশলী (ওয়াগন) রেজাউল করিম।
তদন্ত কমিটির প্রধান বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ঢাকা) মঈনুল ইসলাম এর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিবেদন দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন জানান শনিবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট যাওয়ার পথে ৯৫১নং তেলবাহী ট্রেনটি শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। এরপর থেকে সিলেটের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর ২টার দিকে কুলাউড়া থেকে উদ্ধারকারী হাইড্রোলিক টুল ভ্যান এবং বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে আখাউড়া থেকে আরেকটি উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেনসহ রেলের প্রকৌশলী টিম ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ করেন।
এদিকে ৭টি ওয়াগনের মধ্যে ৪টি ওয়াগনে প্রায় একলাখ ষাট হাজার জ্বালানী তেল রয়েছে। তেলবাহী বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে রেললাইনে ও আশপাশে। এই তেল সংগ্রহ করতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ।
এ দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও একটি ছোট কালভার্ড ও প্রায় ২শ ফুট রেল লাইন ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে।
২০১৮ সালে ফেব্রয়ারি মাসে সাতগাঁও এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনের ১১টি বগি লাইনচ্যূত হয়েছিল। জরাজীর্ণ রেল লাইন সঠিকভাবে সংস্কার না হওয়ায় বারবার এ ধরনের দূর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।