সাঘাটায় স্বাস্থ্য সেবা মিলছে না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
আসাদ খন্দকার,সাঘাটা,গাইবান্ধা সোমবার সন্ধ্যা ০৬:৩০, ৮ নভেম্বর, ২০২১
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা মিলছে না জনসাধারণের। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা নিয়মিত হয়রানি এবং দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে সরকারী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডেলিভারি, ডায়রিয়া এবং দুর্ঘটনায় হতাহত রোগীদের দায়সাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে এ উপজেলার জনসাধারণ কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে হচ্ছে বঞ্চিত ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার ভরসা ৫০ শয্যার সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেকারণে প্রতিদিন ডেলিভারি, ডায়রিয়া এবং দুর্ঘটনায় হতাহতসহ বিভিন্ন ধরণের গরীব অসহায় রোগী আসে অন্তঃবিভাগে ও বহির বিভাগে চিকিৎসা নিতে। কিন্ত সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি না করে বেশীর ভাগ রোগীকে দায়সাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া বহির বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ শত রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের জ্বর মাপা,পেশার মাপা,চোখের রং এবং জিহব্বা কোনোটাই না দেখে সব ধরণের রোগীর জন্যই প্যারাসিটামল,হিস্টাসিন,এন্টাসিড আর ভিটামিন লিখে বিদায় করে দেন ডাক্তাররা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষেরা দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সঠিক চিকিৎসার পরিবর্তে নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
অতিরিক্ত কাঁশি আর বুকের ব্যথা নিয়ে বহির বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী জমেলা বেগম জানান, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার নাইমা চিকিৎসা না দিয়ে তার সাথে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
বহির বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা বারেক মিয়া,দুলু মিয়,সামাদ সহ আরো অনেকে ডাক্তারদের দুর্ব্যবহারের কথা জানান। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলাই যায়না তাদের আচরণে মনে হয় তারা যেন চিকিৎসক নন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তদারকি এবং উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেনা রোগীরা।
এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রাংশ নষ্ট, জনবল না থাকার অজুহাত এবং ঔষুধের সরবরাহ নেই অজুহাতে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া হচ্ছেনা। বাধ্য হয়ে ধার-দেনা করে গরীব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে বিভিন্ন শহরের চিকিৎসকের কাছে। অনেকেই আবার নিরুপায় হয়ে গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় অকালে মৃত্যুবরণ করছে। কেহ আবার চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করছেন।
এব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আরিফুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডাক্তারদের ব্যবহার এমন হওয়ার কথা নয়। রোগীদের সাথে অথবা রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।