যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিকসে যাচ্ছে বাংলাদেশ
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শনিবার সন্ধ্যা ০৬:৫৯, ২২ জুলাই, ২০১৭
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিকসে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের কিশোরদের একটি দল। বিভিন্ন দেশের স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই অলিম্পিকের আয়োজন করা হয়েছে।
ফার্স্ট গ্লোবাল (www.first.global)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকাসহ ছয়টি মহাদেশের ১৬৪টি দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা। যার মধ্যে চল্লিশটিরও বেশি দেশ এশিয়ার।
বিশ্বের প্রতিটি শিশুর জন্যই প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত (সংক্ষেপে এসটিইএম) বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করে দিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে ফার্স্ট গ্লোবাল। তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও উদ্ভাবন গুণাবলি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই ফার্স্ট গ্লোবালের এই অলিম্পিকের উদ্যোগ।
ফার্স্ট গ্লোবালের উদ্দেশ্য বিজ্ঞান ও রোবটিকস শিক্ষার মাধ্যমে সত্যিকারের বৈশ্বিক জনগোষ্ঠী সৃষ্টি। আর তাই নেপাল, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশকে ২০১৭ সালের ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ-এ অংশ নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় চর্চা ও দক্ষতায় বাংলাদেশও যে বিশ্বের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে চলেছে তা জানান দিতে এই প্রতিযোগিতা একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাবার্তা ও ভাবনাচিন্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে রোবটিকস সম্পর্কে আরো নতুন নতুন বিষয় জানা ও শেখার সুযোগ তৈরি হবে।
ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে যাওয়া বাংলাদেশ দলের সদস্যরা হলেন – সুজয় মাহমুদ (ম্যানগ্রোভ স্কুল), আজমান ইসলাম (হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল), আদ্রিয়ান দীপ মোহান্ত (হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল), শাহ সাকীফ ইমাম (অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল), লালেহ-নাজ বার্গম্যান হোসেইন (সানবিমস স্কুল) এবং টিম ক্যাপ্টেন লাবিব তাজওয়ার রহমান (প্রাক্তন শিক্ষার্থী, একাডেমিয়া স্কুল ঢাকা)।
এই হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের মেন্টর হিসেবে রয়েছেন মোহাম্মদ শামস জাবের (টিম মেন্টর এবং প্রতিষ্ঠাতা, দ্য টেক একাডেমি) এবং শামসুল আরেফিন এরফান (টিম অ্যাসিস্ট্যান্ট মেন্টর)।
নিউজক্রেড ঢাকার সংশ্লিষ্টতায় দ্য টেক একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা শামস জাবেরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ দলটি গঠিত হয়। শামস জাবের স্কুলের শিক্ষার্থীদের রোবটিকস, ইলেকট্রনিকস এবং প্রোগ্রামিং ইত্যাদি শিখিয়ে থাকেন। তিনি একাডেমির উৎসাহী শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে দল গঠন করেন।
প্রতিযোগিতায় দলগুলোকে একটি রোবট তৈরি করতে হবে যেটি পানি ও সংক্রামক উপাদন সংগ্রহ করতে পারে, এলগরিদম ব্যবহার করে দুই ধরনের উপাদানের পার্থক্য বুঝে সেগুলোকে আলাদা জায়গায় রাখতে পারে। প্রতিযোগিতার ধরনেও ভিন্নতা রয়েছে। কো-অপারেশন ও কম্পিটিশন মিলিয়ে আয়োজকরা এটিকে বলছেন ‘কো-অপিটিশন’।
প্রতিটি রাউন্ডে প্রতিযোগী দলগুলোকে অন্য দু’টি দেশের জাতীয় দলের সঙ্গে জোট বেঁধে অপর তিন দেশের জোটের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয়োজকদের পাঠানো রোবট-কিট ব্যবহার করে বর্তমানে বাংলাদেশ দল তাদের রোবট বানানোর শেষ মুহূর্তের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। নানাবিধ জটিলতায় এই কিট হাতে পেতে প্রায় দেড়মাস সময় বেশি লেগে যাওয়ায় টিম ক্যাপ্টেন লাবিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলটি দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছে। এমনকি ঈদের ছুটিতেও কাজ করেছে দলটি।
১৬৪ দেশের এই প্রতিযোগিতায় লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর স্বপ্নে বিভোর হয়ে এখন কাজ করছে দলটির সব সদস্য।