নড়াইলে গ্রাম্য শত্রুতার জের ধরে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৯:৩৬, ৯ জুন, ২০২০
নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের লোহাগড়ায় গ্রাম্য শত্রুতার জের ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর একজন ডিলারের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। ভূক্তভোগী ডিলার শেখ আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকাবাসী মঙ্গলবার(৬জুন) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও অভিযোগে জানা গেছে, দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের শেখ আকরাম হোসেন এলাকার সম্মানি ব্যাক্তি হিসাবে পরিচিতি। স্থানীয় রাজনীতিসহ সামাজিক নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন মানুষের সেবা করে আসছেন। বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে তিনি সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর অধীন ডিলার হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে দিঘলিয়া এলাকার দরিদ্রদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে সরকারি বরাদ্দের চাল বিতরণ করছেন। অথচ এলাকার কয়েকজন কুচক্রী লোক ব্যাবসায়ী ও সমাজসেবক শেখ আকরাম হোসেন এর অর্জিত মানসম্মান ক্ষুন্ন করবার জন্যে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও ডিলার শেখ আকরাম হোসেন বলেন, দরিদ্রদের তালিকা করবার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বররা তালিকা প্রস্তুত করে পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা দেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক
চেয়ারম্যান-মেম্বরদের তালিকা অনুমোদন করেন এবং সংশ্লিষ্টদের নামে কার্ড ইস্যু করেন। ইস্যুকৃত কার্ডধারীদেরই নিয়ম অনুয়ায়ি চাল দেয়া হয়ে থাকে। কোন কার্ডধারী মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা বা বিদেশে আছেন কিনা সেটা ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাপার। তালিকা করবার ক্ষেত্রে ডিলারের কিছু করবার বা বলবার নেই। অথচ বিষয়টি আমারঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চলছে। আমি ইস্যুকৃত কার্ড এর বিপরীতে কার্ডধারীদের চাল দিয়েছি। দিঘলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব তালিকা সংশোধনের ব্যাপারে অফিসে কথা বলেছেন। তিনি দরিদ্রদের জন্য খুব আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।
তিনি আরো জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত তালিকায় ১২৭৫ নং কার্ডধারী ফসিয়ার মোল্যা। পিতার মৃত্যুর পর ছেলে ইমদাদুল মোল্যা কার্ড সংশোধনের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এখনো কার্ড আসেনি, তাই সর্বশেষ দেয়া চালও তুলতে পারেননি বলে জানান ইমদাদুল । ১০৩৭ নং কার্ডধারী কুমড়ি গ্রামের আছিয়া বেগম ও ১৩২৭ নং কার্ডধারী আব্দুস সাত্তার, ১১৭২ নং কার্ডধারী মোঃ রফিকুল ইসলাম বর্তমানে মৃত কিনা আমি জনিনা তবে তাদের পরিবার কার্ড নিয়ে হাজির হয়ে চাল নিয়েছে। এসব কার্ডধারীরা মারা গেছেন কিনা সেটাটো ইউনিয়ন পরিষদের জানবার কথা। তবে, কোন কার্ডধারী মারা গেলে মানবিক কারনে ইউনিয়ন পরিষদের অনুরোধে অনেক সময় মৃত ব্যাক্তির পরিবারকে চাল দেয়া হয়ে থাকে। ১৩৬৮ নং কার্ডধারী হিমায়েত খানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী তাহমিনার নামে ওই কার্ড পরিবর্তন হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতিতে তিনি চাল উত্তোলন করছেন। ১০১৭ নং কার্ডধারী নাজমুল শেখ ও ১৩৮৬ নং কার্ডধারী মান্নু খান বিদেশে কিনা জানিনা। ওই দুজনের কার্ড হাজির হওয়ায় চাল দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেব তালিকা সংশোধনের ব্যাপারে কথা বলেছেন।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নীনা ইয়াছমিন বলেন, তালিকাভূক্তি হবার পর কারো মৃত্যু হতেই পারে বা কেউ বিদেশ চলে যেতেই পারে। আমাদের কাছে খবর আসলে আমরা সংশোধনের চেষ্টা করে থাকি। খাদ্য অফিসের সাথে কথা বলেছি। ভুলভ্রান্তি থাকলে তালিকা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আব্দুল মান্নান আলী বলেন, ভুলভ্রান্তি থাকলে তালিকা সংশোধনের জন্য আমরা সব ইউনিয়ন পরিষদেই বারবার চিঠি দিয়েছি। দিঘলিয়ার ডিলার শেখ আকরাম হোসেন এর কাছে উত্থাপিত অভিযোগ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছি। এলাকাবাসীর আয়োজনে দিঘলিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কুমড়ি গ্রামের শেখ আবুল কালাম ও খান সাহাবুদ্দিন সহ অন্যরা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কুমড়ি গ্রামের কয়েকজন কুচক্রী লোক আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী শেখ আকরাম হোসেন এর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন।