নিউ নরমাল – তবুও থেমে নেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শুক্রবার দুপুর ০৩:১৮, ৩ জুলাই, ২০২০
মোঃইসমাইল, রাবি প্রতিনিধিঃ গত মার্চের শুরুতে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ১৭ই মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যার ফলে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর প্রভাবে একাডেমিক পড়াশুনার সাথে সাথে সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোও শুরুতে স্থবির হয়ে পরে। তবে এ ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব লকডাউনের শুরু থেকেই কিছু বিকল্প কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয় এবং অনলাইনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার দিকে মনোযোগী হয়। বিগত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্লাবের সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অনলাইনে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। যা এই সময়েও ক্লাবের সদস্যদের সহশিক্ষা কার্যক্রমে নিজেদের সংযুক্ত রাখতে এবং মানসিকভাবে সতেজ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন ক্লাব সংশ্লিষ্ট সকলে।
এরই ধারাবাহিকতায় ক্লাবের বর্তমান সদস্যদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা উন্নয়ন এবং তাদেরকে ভবিষ্যতের চাকরি বাজারের জন্য উপযুক্ত দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব বেশ কয়েকটি অনলাইন ভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন করে। যেখানে বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ক্লাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত অ্যালামনাইবৃন্দ প্রশিক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া গত ২রা জুলাই বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব সমন্বিতভাবে “বাংলালিংক লার্ন ফ্রম এক্সপার্ট” শিরোনামে একটি অনলাইন ভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন করে। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ চাকরির বাজার এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো সম্পর্কে জানতে পারেন।
এছাড়াও ক্লাবের সদস্যদের মেধা-মননের বিকাশ, দেশের বর্তমান ব্যবসায় ও অর্থনীতি বিশ্লেষণ ক্ষমতা তৈরি করা এবং সমালোচনামূলক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কয়েকটি ধাপে কেস স্টাডির মাধ্যমে একটি অনলাইন ভিত্তিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে যা “Unravel 1.0” শিরোনামে ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই প্রথম রাউন্ড শুরু করার মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসরের পর্দা উঠছে। উল্লেখ্য যে, প্রতিযোগিতার সবগুলো রাউন্ড অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য আগামী ৪ জুলাই প্রতিযোগীদের জন্য একটি অনলাইন ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে।
করোনাকালিন এই সময়েও বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ক্লাবের কার্যক্রম সচল রাখার ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব শিক্ষার্থী মহলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। এ বিষয়ে ক্লাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মেহেদি হাসান বলেন, “ক্লাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা সবসময়ই চেষ্টা করে যাচ্ছি একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে। বিশ্ববিদ্যালয় যেমন তত্ত্বীয় জ্ঞান প্রদান করে যাচ্ছে, আমরা তার পাশাপাশি ঐ অর্জিত জ্ঞানের আলোকে ব্যবহারিক চর্চা অব্যাহত রাখছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা বিশ্বব্যাপী মহামারির এই সংকটপূর্ণ সময়েও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে করোনা পরবর্তী অস্থিতিশীল চাকরি বাজারের প্রতিযোগিতায় নিজেকে একজন দক্ষ মানব সম্পদ এবং যোগ্য প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করি খুব শীঘ্রই এই সংকটপূর্ণ অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটবে এবং আমরা আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরে যাবো।”
উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে “মোটিভেশন-লিডারশীপ-ইনোভেশন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব বেশ সুনামের সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করার পাশাপাশি তাদেরকে আগামীর বাংলাদেশের জন্য একজন দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।