নতুন বছরে দেশ ও জাতির তরে আমাদের কী করণীয়
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ০৯:২২, ১ জানুয়ারী, ২০২০
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকীঃ নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে আল্লাহ আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সময় শেষে বিদায় নিতে হবে পৃথিবী থেকে। মহান আল্লাহর বেঁধে দেওয়া এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাবে এমন সাধ্য নেই কারোর। রাতের পর দিন, দিনের পর রাত; এভাবেই আমরা ধাবিত হচ্ছি জীবনের সমাপ্তির দিকে। সময়ের পালাবদলে জীবন থেকে শীতের পাতার মতো ঝরে পড়ল আরেকটি বছর। হাজির হয়েছে ২০২০ সাল। একজন মুমিনের জন্য সওয়াব অর্জনের সম্ভাবনা নতুন বছর। নতুন বছর মানেই ব্যর্থ অতীতের আবর্জনা পুড়িয়ে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হওয়া। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সাজানো সুন্দর আগামী। একজন মুমিনের জন্য বছরের পালাবদলে রয়েছে চিন্তার খোরাক। দেয়ালে ঝুলন্ত ২০১৯-এর ক্যালেন্ডারটি সরিয়ে ২০২০ সালের ক্যালেন্ডার লাগিয়ে দিলেই করণীয় শেষ নয়। নতুন বছরে আমাদের অপরিহার্য করণীয় হলো আত্মসমালোচনা। চোখ বোলানো দরকার চলে যাওয়া বছরটির সফলতা-ব্যর্থতার খতিয়ানে। বিদায়ী বছরে কী কী ব্যর্থতা ছিল, সফলতার পাল্লাই বা কতটুকু ভারী, তা চিন্তা করা। নিজেকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া বিবেকের আদালতের কাঠগড়ায়। নয় তো আমাদের জীবনযাত্রায় আসবে না কোনো পরিবর্তন। একজন মুসলমান হিসেবে চিন্তা করা উচিত মহান আল্লাহর হুকুমগুলো পালন করেছি কিনা। হজরত উমর (রা.) একদিন তাঁর ভাষণে জনতাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে মানুষ! তোমরা হিসাব চাওয়ার আগে নিজেই নিজের হিসাব খতিয়ে দেখ। দাঁড়িপাল্লায় তোমার আমল ওজন করার আগেই নিজের আমল ওজন করে দেখ। আল্লহর দরবারে চূড়ান্তভাবে নিজেকে পেশ করার প্রস্তুতি প্রহণ কর।’ তিরমিজি। জীবনের ডায়েরিতে ধরা পড়া ভুলগুলোর জন্য মহান প্রভুর দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করাই নববর্ষে আমাদের প্রথম কাজ। নববর্ষের দ্বিতীয় কাজ হলো নতুন বছরের কর্মপরিকল্পনা। আগামী বছরের সময়টুকুর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই প্রয়োজন পরিকল্পনা। নতুন বছরে দেশ ও জাতির তরে আমাদের কী করণীয়, একজন মুসলমান হিসেবে জাতি আমার কাছে কী প্রত্যাশা করে, তা পূরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়াই নববর্ষে আমাদের করণীয়। ছোট হয়ে আসছে জীবন। জীবনের সমাপ্তি, মৃত্যু ও পরকালের দিকে ক্রমেই ধাবিত হচ্ছি আমরা। দুনিয়ার জীবনের সামান্য সময়েই একজন মানুষের সফলতা-ব্যর্থতা নির্ভর করে। দুনিয়াই তো পরকালের শস্য খেত। পরকালের পাথেয় সংগ্রহের মহান লক্ষ্যেই পৃথিবীতে আমাদের আসা। সেই পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে মহান আল্লাহর বেঁধে দেওয়া সময়েই। মুমিন তার জীবনের চূড়ান্ত গন্তব্য জান্নাতের দিকে কতটা এগিয়ে যেতে পেরেছে, তা ভেবে দেখা দরকার এখনই। পাথেয় সংগ্রহ করেছি কতটুকু সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই চিন্তা করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে যে ব্যক্তি সচেতন হয় রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকেই বুদ্ধিমান বলেছেন। হজরত শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে নিজের হিসাব ও মৃত্যুপরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। তিরমিজি। ইয়া আল্লাহ আমাদের সকলকে আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।