ঢাকা (বিকাল ৪:৩১) বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ ইং

ধর্মপাশায় বাবার বিয়ের দুই বছর আগে সন্তানের জন্ম সনদ



ভূয়া জন্ম সনদে সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে; অভিভাবক সেজে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যুবলীগ নেতা মাঈন উদ্দীন ।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে, উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা ময়না মিয়া চৌধুরীর ছেলে মাঈন উদ্দিন চৌধুরী ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি তার কন্যা সন্তানের জন্ম নিবন্ধনে বয়স উল্লেখ করেন ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং। আর ওই ভূয়া জন্ম সনদে তিনি তার মেয়ে মাইশা চৌধুরী ওরফে মাহিকে নিজ গ্রামের মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শিশু শ্রণীতে ভর্তি করেন। পরে তিনি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক সেজে চলতি বছরের পহেলা জুন তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হন।

নিয়মানুযায়ী ৫ বছর বয়স না হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ছেলে-মেয়েকে বিদ্যালয়ে ভর্তী করা যাবেনা। কিন্তু সু-চতুর ও এলাকার প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত মাঈন উদ্দিন চৌধুরী ওই নীতিমালাকে উপেক্ষা করে তথ্য গোপন করে; তিনি সন্তানের ভূয়া জন্ম সনদ দিয়ে তার মেয়েকে ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন এবং তিনি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেজে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে; তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।

মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজলা যুবলীগ নেতা অলি মাহমুদ খান ওরফে টিটু মিয়াসহ অই ইউনিয়নের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মীদের সাথে জানা যায় ,মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের সভাপতি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ছাতক এলাকায় বিয়ে করেন এবং তার ওই বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে অনেকেই গিয়েছিলেন।

কিন্তু তিনি তার সন্তানের জন্ম সনদে বয়স উল্লেখ করেন ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং যা সম্পূর্ণই ভূয়া। তারা আরো বলেন, তথ্য গোপন করে নিজ সন্তানের ভূয়া জন্ম সনদ দিয়ে সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করে; ভূয়া অভিভাবক সেজে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা বিষয়টির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য; সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

উপজেলার মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

সেলবরষ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বাবুল চৌহান বলেন, মাঈন উদ্দিন চৌধুরী যে জন্ম সনদ দিয়ে তার মেয়েকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছেন, আমাদের ওয়েব সাইডে অনেক চেষ্টা করেও এর কোনো অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এটি সম্ভবত ভূয়াই হবে।

মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির মেয়ের জন্ম সনদ জাল কিনা, সেটা আমার জানা নেই। তবে তার বয়স ও জন্ম তারিখ ঠিক আছে দেখেই আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে এখন যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে, তাই সেটি আমরা এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাসের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও; তিনি ফোনটি না ধরায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, জাল জন্ম সনদে কেউ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে থাকলে, অভিযোগের ভিত্তিতে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT