দুর্গম চরাঞ্চলের ২৬ হাজার পরিবার পাচ্ছে বিদ্যুতের আলো
আসাদ খন্দকার,সাঘাটা,গাইবান্ধা শনিবার দুপুর ০১:৫১, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকারকে সামনে রেখে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা সহ ৩টি উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের প্রায় ২৬ হাজার পরিবার পাচ্ছেন বিদ্যুৎ সুবিধা। সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১শ’ ২০ কোটি টাকা।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ও ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক এক্সপানশন (ডিএনই) নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, নদীবেষ্টিত গাইবান্ধা জেলার বুক চিড়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ আরও বেশ কয়েকটি নদ-নদী। এসব নদীর বিভিন্ন স্থানে ভেসে উঠেছে দুর্গম চরাঞ্চল। যুগ যুগ ধরে এসব চরে বসবাসরত পরিবারের মানুষেরা অন্ধকারে ভুতরে পরিবেশে বাস করলেও তাদের কপালে জোটেনি বিদ্যুতের আলো। এতে করে চরাঞ্চলের মানুষেরা অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে ছিল।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের আওতায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, গজারিয়া, উড়িয়া ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র নদীরতল ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারী, মোল্লারচরের মাটির নিচ দিয়ে ১১ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড গাইবান্ধার তত্বাবধানে ৩৬টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৬শ’ কিলোমিটার লাইন ও দুটি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- অফগ্রিডে ৩৩/১১ কেভি, ১০ এমভিএ ফুলছড়ি-২ (বাজে ফুলছড়ি) ও ফুলছড়ি-৩ (গাবগাছী)। ওইসব চরাঞ্চলবাসীদের মাঝে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছাতে ইতিমধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ফুলছড়ির টেংরাকান্দি চরের বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা চরে বসবাস করে আসছি। কিন্তু বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি এখানকার মানুষরা। তিনি আরও বলেন, চরাঞ্চলবাসী বিদ্যুৎ পাবেন, এমনটা কখনো ভাবেনি। এখন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পাব, এটি যেন স্বপ্নের মতো। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাচ্ছি। মুজিব জন্মশত বর্ষে এটিই হবে তার বিশেষ উপহার।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, চলতি মাসে বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু শুকনো মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নৌ যোগে কোনো মালামাল পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। হয়তো আগামী বছরের জুন মাসের দিকে এটি সম্পন্ন করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, জেলার ৩টি উপজেলার চরাঞ্চলে প্রায় ২৬ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন। এই প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ১শ’ ২০ কোটি টাকা।