টাপেন্টাডল মাদক ঘোষণা, ঔষধের দোকানে ভিড় বেড়েছে মাদকসেবীদের
মোঃ কামরুজ্জামান শুক্রবার বেলা ১২:৩৩, ১৭ জুলাই, ২০২০
মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট টাপেন্টাডল বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে পৌর শহরের বেশ কিছু ঔষধের দোকানের বিরুদ্ধে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করায় প্রশাসনের মাদকবিরোধী অভিযানের কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে। ফলে মাদকসেবিরা পড়ে যায় বিপাকে। ফেন্সিডিল, হিরোইন, ইয়াবার পরিবর্তে কম খরচে সেবন করতে পারে এবং হাতের নাগালে পাওয়ায় মাদকসেবীরা ভিড় করছে ঔষধের দোকানে। আর এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বিক্রি করছে এই ট্যাবলেট। গত ৮ জুলাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত করা হয়েছে। ব্যথানাশক টাপেন্টাডল জাতীয় ঔষধ মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করায় একে ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এসিআই এর লোপেন্টা, স্কায়ারের পেন্টাডল, অপসোনিনের টাপেন্টাডল, এসকেএফ এর ট্যাপেন্টা যেগুলোতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০১৮ ‘খ’ ৬৫ ধারা মোতাবেক আইনে মামলা দায়ের করা যাবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। এরপরেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী টাকার বিনিময়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়ায় ২০ টাকার নেশা জাতীয় ট্যাবলেট কারও কাছে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করে আসছে। শুধু এটাতেই সীমাবদ্ধ নয় ঘুমের ট্যাবলেট, সিভিট, টমিফেন, দিয়ে ঝাটকা, ফুটুস, ঝাঁকি নামের একটা তরল ঔষধ তৈরি করে যা ২০০ টাকায় বিক্রি করে। যে কারণে মাদকসেবীরা এখন ভিড় করে ঔষধের দোকানে। মাঝে মাঝে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের অত্যাচারে আশেপাশের অন্যান্য লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। তারা ঐসব দোকানের বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কে অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হয় না। দুই একদিন বন্ধ থাকার পর আবার বিক্রি করতে শুরু করে। সকাল হলেই দেখাযায়, দিনের যে কোনো সময়ে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহর এলাকায় কিছু নাম ধারি তাছিন, মেহেরুনেছা ফার্মেসীসহ ৫টা ঔষধের দোকানে অবাদে ঐসব নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বিক্রি করছে মাদকসেবীরা যেনো সিরিয়াল ধরে ঐ ট্যাবলেট গুলো ক্রয় করে। মাঝে মাঝে ঐসব মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি করতে দেখা যায় এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয় লোকজন। সান্তাহার নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, যারা মাদক সেবন করে তাদের বেশিরভাগ বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। ফলে দিনদিন ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে যুবসমাজ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিবার পরিজন। সৃষ্টি হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদসহ নানান ধরনের জটিলতার। বেড়ে চলেছে চুরি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুনসহ বড় ধরনের অপকর্ম তাই মাদক বন্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাহলে এই সমস্যা গুলো হবেনা বলে মনে করি। সান্তাহার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বগুড়া খ সার্কেলের পরিদর্শক সামছুল আলম বলেন, সরকার গত ৮ই জুলাই থেকে এ সকল ঔষধ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন। যে সকল ঔষধ বিক্রেতারা এই জাতীয় ট্যাবলেট অবৈধ ভাবে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বগুড়া ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক আহসান হাবীব বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ট্যাবলেট বিক্রি করার নিয়ম নাই। যদি কেউ লোপেন্টা বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।