চার টার্মিনালে মাসে ১৮ কোটি টাকার চাঁদাবাজি
Alauddin Islam মঙ্গলবার দুপুর ০১:১০, ২৫ জুলাই, ২০১৭
রাজধানীর সায়েদাবাদ, ফুলবাড়ীয়া, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে মাসে ১৮ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজার। আর প্রতিটি পরিবহন থেকে প্রকাশ্যে দৈনিক ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এই হিসাবে ঢাকার এই ৪ টার্মিনালের যানবাহন থেকে দিনে ৬০ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
তবে অপ্রকাশ্যে কতো টাকা আদায় হচ্ছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। পরিবহন খাতকে জিম্মি করে পরিবহন শ্রমিকদের একটি সংগঠনের নামে এসব টাকা তোলা হয়। আর এ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা হয় আরো কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের মধ্যে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার ৪ টার্মিনালে এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন গুটি কয়েক নেতা। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে চাঁদা তোলা হয় কয়েকজন শ্রমিক নেতার নামে।
গোটা পরিবহন খাতকে জিম্মি করে তারাই যখন-তখন ইচ্ছামতো বাস-ট্রাকসহ নির্ধারিত যানবাহনের চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদের। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারাও এ চাঁদার ভাগ পান বলে অভিযোগ তাদের।
এ ব্যাপারে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক নেতা ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক করম আলী মানবজমিনকে বলেন, সারাদেশে শ্রমিক সংগঠনগুলো প্রতিটি গাড়ি থেকে মাত্র ৩০ টাকা করে চাঁদা তোলে। এর ১০ টাকা ফেডারেশনকে দিয়ে দেয় আর ২০ টাকা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ইউনিয়ন নিজেদের তহবিলে রেখে দেয়।
এর বাইরে কোনো টাকা কেউ তুলে থাকলে তার দায় আমাদের না। আমাদের কোনো শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যদি নির্ধারিত এই ৩০ টাকার বেশি চাঁদা তোলার সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজন কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।
তবে নির্ধারিত ৩০ টাকা আদায়ের নিয়ম থাকলেও ৪ টার্মিনালের সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্যে গড়মিল পাওয়া যায়। ফুলবাড়ীয়া সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন বাচ্চু মানবজমিনকে বলেন, আমরা কোনো বাড়তি চাঁদাবাজি করি না। আমরা শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতিদিন ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের জন্য নির্ধারিত মাত্র ৭০ টাকা তুলে থাকি। এটার হিসাব আমাদের কাছে রয়েছে।
তবে প্রতি গাড়ি থেকে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা পরিচালন ব্যয় হিসাবে টাকা তোলেন পরিবহন কোম্পানিগুলো। এটার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। অভিযুক্ত অন্যান্য শ্রমিক নেতারাও চাঁদা তোলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তারা জানার তাদের কোনো চাঁদাবাজ বাহিনী নাই। কেউ কারো নামে চাঁদাবাজি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।