গৌরীপুরে সরকারি নীতিমালা না মেনে সেচ সংযোগ স্থাপন,আদালতে মামলা
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ সোমবার বিকেল ০৪:৩৬, ১ মার্চ, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের বড়ইকান্দা গ্রামে নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে অন্য প্রকার মামলা দায়ের করেছে, যার মামলা নং- ০৬/২০২১সন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, এ উপজেলার বড়ইকান্দা গ্রামে বিআরডিবি’র মাধ্যমে ঋণ নিয়ে ১৯৯০ সালে বিএডিসি’র গভীর সেচ প্রকল্পের স্কীম চালু করেন বড়ইকান্দা কৃষক সমবায় সমিতি লি., যার হিসাব নং-৪২০/২৪৮৩। কয়েকবছর বন্ধ থাকার পর ২০১৭ ইং সালে উল্লেখিত সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন নিজ উদ্যোগে বিদুৎ সংযোগের মাধ্যমে পুণরায় সেচ স্কীমটি চালু করেন।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার জন্য বিআরডিবি’র সমিতির ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। নব উদ্যোমে চালুর পর ঋণের টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেয়া হলেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় একই গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান। তিনি একটি অগভীর সেচ লাইসেন্স নিয়ে গভীর সেচ প্রকল্পের স্কীম চালু করে, যার হিসাব নং- ৪২/২০১৯-২০। কেএসএস ব্যবস্থাপক এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সেচ কমিটি ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখের সভায় অভিযুক্ত সেচ লাইসেন্সটি স্থগিত রাখে এবং সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিদ্যুৎতের সংযোগ বন্ধ রাখতে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবর উক্ত স্থগিতাদেশের কপি প্রেরণ করা হলেও অদৃশ্য কারণে গত ৭ জানুয়ারী বিদ্যুৎ সংযোগটি চালু করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (সদস্য সেবা) মোঃ আফজাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি হাবিবুর রহমানের ফাইলটি প্রতিবেদককে দেখান। ফাইলটিতে দেখা যায় উপজেলা সেচ কমিটি থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য কোন কাগজপত্র নেই।
বড়ইকান্দা কৃষক সমবায় সমিতি লি. এর ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের গেজেটের বিধি অনুযায়ী একটি গভীর নলকূপ থেকে আরেকটি নলকূপের দূরত্ব থাকতে হবে ৫০০ মিটার বা ১৬৪০ ফুট। হাবিবুর রহমানকে অবৈধভাবে সেচ কমিটি এই লাইসেন্স প্রদান করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেচযন্ত্রের মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, উপজেলা সেচ কমিটি দু’পক্ষকে একত্র করে আলাদা আলাদা ভাবে ক্ষেতে পানি দেয়ার নির্দেশ দেন। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সেচ কমিটির নির্দেশ না মেনে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বিএডিসি ঈশ্বরগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও গৌরীপুর উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য-সচিব মোঃ তানভীর হাসানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথেই মোবাইল কল কেটে দিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট পর আবার তিনি ফোন দিয়ে প্রতিবেদককে তার সাথে দেখা করার জন্যে বলেন। পরে লাইসেন্সের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী হাবিবুর রহমানকে সেচ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি হাসান মারুফ এ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, দু’পক্ষকে একত্রিত করে বিষয়টির মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। মামলার বিষয়টি তার একান্ত ব্যক্তিগত।