গৌরীপুরে পলাশ হত্যা মামলার দ্রুত বিচার চাইছে পরিবার
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ বুধবার ১২:৩৩, ১৮ মে, ২০২২
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী মইনুল হাসান পলাশ (৩০) হত্যা মামলার দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন পরিবার।
পলাশ উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চর শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। গত বছরের ৮ আগস্ট রাতে দুবৃর্ত্তরা ছুরিকাঘাত করে পলাশকে হত্যা করে।
এদিকে হত্যাকান্ডের পর আট মাস পার হয়ে গেলেও এখনো হত্যাকারীদের শনাক্ত করে অভিযোগপত্র দায়ের করতে পারেনি পুলিশ। এতে পলাশের হত্যার সঠিক বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে স্বজনেরা।
জানা গেছে উপজেলার চর শ্রীরামপুর বাজারে পলাশ দোকান নিয়ে ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করতো। গত বছরের ৮ আগস্ট রাতে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুবৃর্ত্তরা পলাশকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় পলাশের ভাই নাইমুল হাসান রুবেল বাদী হয়ে নিহতের চাচাতো ভাই কাজলসহ ৮ জন ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করে। সেখান থেকে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।
বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলার ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে ওই আসামিরা জামিনে মুক্ত আছেন।
নিহত পলাশের স্বজনদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মামলার সন্দেহভাজন আসামিরা নিহত পলাশের চাচাত ভাই, স্বজন ও প্রতিবেশি। এর মধ্যে পলাশের চাচাত ভাই কাজলের দিকে পরিবারের সন্দেহ বেশি। পরিবারের সদস্যদের ধারণা পূর্ব বিরোধের জের ধরে কাজল এ হত্যার পরিকল্পনা করে থাকতে পারেন।
নিহত পলাশের চাচা আনোয়ার হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডের তিন মাস আগে পলাশের এক ভাতিজাকে মারধর করে কাজল। পলাশ প্রতিবাদ করলে পরে গ্রাম্য সালিশে কাজল ঘটনার জন্য ক্ষমা চান। এরপর থেকে পলাশের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন কাজল। যে কারণে পলাশ হত্যায় সন্দেহভাজন হত্যাকারী হিসাবে কাজলের নাম সবার আগে আসে বলে দাবি স্বজনদের।
নিহত পলাশের অপর চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, হত্যাকান্ডের দিন রাতে পলাশ দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় কাজলের এক সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা নেয়ার জন্য মোবাইল করে পলাশকে ডেকে নেয়। এ ঘটনার অল্প সময় পরেই পলাশ হত্যা হয়। এই ঘটনাগুলো কাজলের প্রতি আমাদের সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।
পলাশের স্ত্রী লিমা আক্তার ১৪ মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীদের শনাক্ত করে পুলিশ দ্রুত মামলার অভিযোগপত্র দায়ের করে আসামিদের বিচারের আওতায় আনুক; এটাই দাবি।
জেলা পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আবুল কাশেম সাংবাদিকদের জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলার এজাহারভুক্ত আট জন আসামির মধ্যে সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার তদন্ত চলছে। নিহতের পরিবারের যাদেরকে নিয়ে সন্দেহ হয় তাদেরকে নিয়েও তদন্ত করেছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তদন্ত আরো এগিয়ে যাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দেয়ার চেষ্টা চলছে।