আগামীকাল পূর্ণ হতে যাচ্ছে ইবি ভিসি ও কোষাধ্যক্ষ’র মেয়াদ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বুধবার রাত ০৮:০৯, ১৯ আগস্ট, ২০২০
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শীর্ষ দুই পদের মেয়াদ পূর্ণ হতে যাচ্ছে আগামীকাল ২০ আগস্ট। এরই মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভিসি হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছেন প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীএবং ট্রেজারার পদে মেয়াদ পূর্ণ করছেন প্রফেসর ড. সেলিম তোহা।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ১২ তম ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান ইবি’র ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. আসকারী। একইসঙ্গে ট্রেজারার পদে নিয়োগ পান একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিম তোহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ তাদেরকে ৪ বছরের জন্য উল্লেখ্য দুটি পদে নিয়োগ দেন। এদিকে, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় ২০ আগস্ট থেকে শূন্য হচ্ছে প্রশাসনিক শীর্ষ এই দুই পদ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ বলেন, ইবি’র ভিসি ও ট্রেজারার পদের চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২০ আগস্ট। ২১ আগস্ট থেকে পদ দুটি শূন্য হচ্ছে। ফলে, সরকার চাইলে পূণরায় তাদেরও নিয়োগ দিতে পারেন, আবার নতুন কাউকেও দিতে পারেন।
এবিষয়ে ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা বলেন, আগামী ২১ আগস্ট ট্রেজারার হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের মেয়াদকাল শেষ হতে যাচ্ছে। আমার অতি পরিচিতজনেরা জানেন, আমি সবসময়ই নীরবে- নিঃশব্দে কাজ করে যেতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগার এবং সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণের যে গুরু দায়িত্ব আমার উপর অর্পণ করেছিলেন তা আমি আমার সাধ্যের শেষ বিন্দু দিয়ে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতে চেষ্টা করেছি। যা আমার দায়িত্ব এবং কর্তব্য ছিল তা আমি গভীর দেশপ্রেম আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা নিয়ে সম্পন্ন করেছি। আমি কাজ করি আমার আনন্দ নিয়ে। প্রতিটি কাজের মূল্যায়ন আমার নিজের কাছে আমার বিবেকের কাছে। মাননীয় ভিসি এবং প্রো-ভিসিসহ আমি আমার সকল সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে পেরে তৃপ্ত, খুশী এবং আনন্দিত। আমি যা করেছি তা সংশ্লিষ্ট সকলেই দেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে আমার ভূমিকার সবাই জীবন্ত সাক্ষী। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসাবে আমার মূল মূল্যায়ন আমার অগণিত শিক্ষার্থীদের কাছে। আমার মূল পরিচয় আমি শিক্ষক। শিক্ষক হিসেবে আমি প্রতিদিনই তাদের কাছে পরীক্ষিত হচ্ছি – এটাই ভেবে আমি সদা জাগ্রত থাকি। সেটাই আমার নিত্য আনন্দ আর ভালোলাগা এবং আনন্দময় ভালোবাসার গভীর উপলব্ধি এবং অনুভূতি। আমি সবার দোয়া চাই।
অন্যদিকে প্রফেসর ড. আসকারী নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, গত চার বছরে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং গুণগত মান বাড়াতে। আন্তর্জাতিকীকরণের পথে বিশ্ববিদ্যালয়টির সফল যাত্রা শুরু হয়েছে। আমার চার বছরে ইবি’র সঞ্চয়ের খাতায় বেশকিছু অর্জন দেখতে পাই। মেয়াদকালের সুন্দর পরিসমাপ্তিতে স্বস্তি বোধ করছি। কতটুকু সফল হয়েছি তা বিচারের ভার সময়ের উপরই রইল। আমাকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীদের গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই পদ দুটির জন্যে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন ইবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ডজন খানেক শিক্ষক। তাদের মাঝে মেয়াদ পূর্ণ করতে যাওয়া বর্তমান ভিসি ও ট্রেজারার রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়াও ভিসি পদের এ প্রতিযোগিতায় রয়েছেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রো-ভিসি ড. কামাল উদ্দিন, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নাসিম বানু ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইবারের সাবেক ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার, ইবির সাবেক ট্রেজারার ও ঢাবির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. আফজাল হোসেন, ইবির সাবেক শিক্ষক ও বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান, রাবির মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. শাহ আজম শান্ত, ও রাবির প্রফেসর ড. পি এম শফিকুল ইসলাম শফিক।
এদিকে ট্রেজারার পদের নিয়োগ পেতে লবিংয়ে ব্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. কাজী আখতার হোসেন, শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মাহবুবুল আরফিন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক স্বপন, ছাত্র উপদেষ্টা ও বাংলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া ও আইন বিভাগের প্রফেসর ড. শাহজাহান মন্ডল।