অধ্যক্ষের খামখেয়ালীপনায় ফেরত গেলো প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দকৃত ৭০ লাখ টাকা
ওবায়দুর রহমান শুক্রবার সন্ধ্যা ০৭:১৬, ২৮ আগস্ট, ২০২০
ময়মনসিংহের গৌরীপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের অদক্ষতায় ৭০ লাখ টাকা ফেরত গিয়েছে। ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কেনাকাটার জন্য বরাদ্দকৃত এ টাকা ফেরত যায়।
বিভিন্ন মেশিনারিজ মেরামত, কারিগরি ও শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল উক্ত টাকা। এতে প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রছাত্রীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল। শিক্ষার্থীরা উপকরণের মাধ্যমে হাতে কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নিয়মানুযায়ী অনলাইনে দরপত্রের মাধ্যমে কেনাকাটার শর্ত থাকায় এ কেনাকাটার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়নি।
বিষয়টি অপকটেই স্বীকার করেন গৌরীপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আলী আহাম্মদ মোল্লা। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের দক্ষ শিক্ষক বা টেকনিক্যাল ব্যক্তি না থাকায় দুই অর্থ বছরের ৭০ লাখ টাকার কেনাকাটা করা যায়নি। অর্থ বছর শেষ হয়ে যাওয়ায় টাকাটা ফেরত গিয়েছে।
গৌরীপুরের অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের আইসিটি শিক্ষক বা অনলাইনে দক্ষ চুক্তিভিত্তিক কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সহযোগিতায় অনলাইন দরপত্র তৈরির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যেতো কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এর দায় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপিয়ে বলেন, সব কাজ আমার একাই করতে হয়, কারো সহযোগিতা পাওয়া যায় না, তাই আমি কাজটি করতে পারিনি, তাছাড়া আমার নিজের অনলাইন বা ইন্টারনেট সম্পর্কে তেমন দক্ষতা নেই।
গৌরীপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও অফিস স্টাফদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ বা কেনাকাটার ব্যাপারে কারো সহযোগিতা বা পরামর্শ নেন না, তিনি একাই সব কাজ করতে চান।
ইতোমধ্যে সরকারি টেন্ডারে যে সব কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে তিনি ঠিকাদারের সাথে আঁতাত করে নিজেই মালামাল কিনে দিয়েছেন ও কমিশন নিয়েছেন। ২০১৯ সালে একটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করার সময় তিনি অবৈধভাবে ঠিকাদারের কাছে প্রতিষ্ঠানের রক্ষিত পুরনো ইটবিক্রি করেছেন। আর এসব নিম্নমানের ইট ঠিকাদার শ্রেণি কক্ষের মেঝে নির্মাণে ব্যবহার করেছে। উনার এমন খামখেয়ালীপনায় প্রতিষ্ঠানের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
শিক্ষকরা আরো জানান, অধ্যক্ষ সবার সাথেই খুব খারাপ আচরণ করেন যে কারণে স্বপ্রণোদিত হয়ে কেউ তাকে পরামর্শ দিতে জান না।