১০২ বছরে পদার্পণ করলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০২:৪০, ১ জুলাই, ২০২২
১ জুলাই দেশের একমাত্র শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি পা রেখেছে প্রতিষ্ঠার ১০২তম বর্ষে। এবারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী প্রতিপাদ্য ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’।
বঙ্গভঙ্গ রদ বিতর্ক ও পূর্ববঙ্গের মানুষের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের জন্য একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণি তৈরি উদ্দেশে ১৯২১ সালের ১জুলাই প্রতিষ্ঠা করা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বাঙালি জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে আলোর মশাল নিয়ে সামনে এসেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মনে করা হয় বাঙালি জাতির প্রতিবাদী স্বত্বার স্ফুরণ। ৪৮ থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি পরতে পরতে এই নাম জড়িয়ে আছে।
আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও শতবর্ষে পেরিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সঙ্কটে প্রকট। শিক্ষকদের গবেষণায় অনীহা, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগও দিনে দিনে বাড়ছে। রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এসব কাটিয়ে খুব শিগগিরই নিভু নিভু হয়ে জ্বলতে থাকা জ্ঞানের মশাল পূর্ণ আলোয় জ্বলে উঠুক। এমনটাই আশা শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুপুর আক্তার বলেন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের উৎসভূমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ দেশের সব গণ-আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা ছিল অসামান্য। মহান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পিছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসামান্য অবদান রয়েছে ।
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই গৌরব হারাতে বসেছে। সেই গৌরব ফিরে পেতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট কাজে নিজেদের নিয়োজিত করা উচিৎ বলে মনে করে নুপুর।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রা সহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হবে।
সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলোচনা সভায় অংশ নেবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।