হিন্দু পরিবারদের রক্ষার্থে মুসলিম পরিবাররা সজাগ রয়েছে
এস এম সাখাওয়াত বুধবার রাত ১১:৩৪, ১৪ আগস্ট, ২০২৪
সম্প্রতি সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা আতংকিত বোধ করলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা রয়েছেন সুরক্ষিত। কেননা সুখে-দুঃখে, সময়-অসময়ে পারস্পারিক ভাতৃত্ববোধ নিয়ে হিন্দু মুসলিমরা জীবন-যাপন করছেন একসাথে। জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন এখানে ধর্মীয় কোনো ভেদাভেদ নেই। আর তাই পিরোজপুর গ্রামের হিন্দু পরিবারগুলো রয়েছেন নিশ্চিন্তে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমনই এক গ্রাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে মাত্র ২শত মিটার দূরের এই গ্রাম। সম্প্রীতির গ্রামটিতে দুই শতাধিক মুসলিম পরিবারের বসবাস। আর তাদের সাথেই মিলেমিশে আছে পাঁচটি হিন্দু পরিবার। পিরোজপুর গ্রামে সংখ্যায় একেবারে কম হলেও সাম্প্রদায়িক আক্রমণ বা রাজনৈতিক উত্তাপ কখনই স্পর্শ করেনি হিন্দু ধর্মালম্বীদের। কেননা এই পরিবারগুলোকে বছরের পর বছর আগলে রেখেছেন মুসলিমরাই। আর তাই সীমান্তবর্তী এই গ্রামটিতে হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই।
কাজল রানী নামে এক গৃহবধু বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলমান এক হয়ে গ্রামটিতে বসবাস করছি কয়েক যুগ ধরে। মুসলিমদের কেউ আমাদের ওপর কোনোভাবে অত্যাচার-অবিচার করে না। আমরাও তাদের সাথে মিলেমিশে থাকি। এই গ্রামে আমরা খুবই ভালো আছি।
একই গ্রামের শিলাস্ত্রী বলেন, এই গ্রামের মুসলিমরা আমাদের সাথে ভালভাবেই চলাফেরা করে। এতো সুন্দর পরিবেশ মনে হয় আর কোথাও পাওয়া যাবেনা। আমাদের মতো ভাল আর কেউ নাই বোধহয়। আমরা খুবই ভাল আছি এই জায়গাতে। কোনো বিপদ হলে মুসলিমরা ঝাঁপিয়ে পড়ে।
শিল্পি খাতুন নামে এক মুসলিম গৃহবধূ বলেন, আমাদের এখানে হিন্দু মুসলিম কোনো দ্ব›দ্ব নেই। আমরা সীমান্ত এলাকায় বসবাস করছি ঠিকই। তারপরও আমাদের ভেতরে কোনো ভেদাভেদ নেই। সুখ-দুঃখে আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়াই। সব কিছুতেই আমরা একে অপরকে সাহায্য করি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাতায়াত করি। কোনই অসুবিধা হয় না।
এ বিষয়ে শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় আমরা ভালই আছি। হিন্দু-মুসলিম এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা কখনোই তাদের নির্যাতন করেনি। কেউ কখনো তাদের নির্যাতন করেনি।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, দেশের অন্যান্য সীমান্তের মতো কড়া নজরদারি রয়েছে পিরোজপুর সীমান্তেও। এই এলাকার যারা হিন্দু আছেন তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। এলাকায় যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয় সে জন্য বিজিবি সজাগ রয়েছে। কোনো সীমান্ত এলাকাতেই সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হতে দেওয়া হবে না। কেউ চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।