সুনামগঞ্জে ৪৬টন কয়লা পাচাঁর,১টন জব্দ করেছে বিজিবি
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ শুক্রবার দুপুর ০৩:২৬, ৬ নভেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জের বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে ৪৬মে.টন কয়লা পাচাঁর করেছে সোর্স পরিচয়ধারীরা। তার মধ্যে ১মে.টন চোরাই কয়লা জব্দ করেছে বিজিবি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়- আজ ০৬.১১.২০ইং শুক্রবার ভোর ৫টায় জেলার তাহিরপুর সীমান্তের চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন লালঘাট ও বাঁশতলা এলাকা দিয়ে বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরব তাদের ব্যবসায়িক পার্টনার চিহ্নিত চোরাচালানী শহিল্লাহ,খোকন মিয়া ও বাবুল মিয়াকে নিয়ে শ্রমিক সর্দার হারুন মিয়া ও জসিম মিয়াকে দিয়ে প্রায় ১১মে.টন চোরাই কয়লা ভারত থেকে পাচাঁর করে।
পরে হারুন মিয়ার লালঘাটের বাড়ির সামনে ও পাশর্^বর্তী বাঁশতলা গ্রামের মজিদ মিয়ার পুকুরের দক্ষিণে পৃথক ভাবে ১টি নৌকায় চোরাই কয়লা বোঝাই করে সমসার হাওর দিয়ে ওপেন নিয়ে যায়। কিন্তু এই অবৈধ কয়লা বোঝাই নৌকা আটকের জন্য বিজিবি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে এর আগে রাত ৮টায় উপরের উল্লেখিত সোর্সরা ১১৯৬ পিলারের পূর্ব দিক দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁরের সময় ১৭বস্তা (১টন) কয়লা জব্দ করেছে বিজিবি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করেনি বিজিবি। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় বালিয়াঘাট সীমান্তের দৌড়েরঘাট, লালঘাট ও লাকমা চাকমাহাটি এলাকা দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ১৫মে.টন কয়লা ও বিপুল পরিমান মদ পাচাঁর করে সোর্স ইয়াবা কালাম ও জানু মিয়া গং। পরে লালঘাট গ্রামের নবী হোসেনের বাড়ির দক্ষিণে ও পাকা রাস্তার মাথায় পৃথক ভাবে ১টি নৌকায় অবৈধ কয়লা ও মাদক বোঝাই করে চোরাচালানী খোকন মিয়া।
একই সময়ে অপরদিকে বাঁশতলা তেতুল গাছ ও ১১৯৬পিলার এলাকা দিয়ে পৃথক ভাবে প্রায় ২০টন কয়লা পাচাঁর করে চোরাচালানী শহিদুল্লা ও বাবুল মিয়া। পরে চোরাচালানী শহিদুল্লার লালঘাটের বাড়ির পিছনে ও বাঁশতলা গ্রামের জলিলের বাড়ির দক্ষিনে হাওর পাড়ে পৃথক ভাবে ২টি নৌকা অবৈধ কয়লা বোঝাই করে ওপেন কয়লা নিয়ে যায়। কিন্তু এসব অবৈধ মালামাল আটকের ব্যাপারে বালিয়াঘাট ও চাঁরাগাঁও ক্যাম্পের কর্মরত বিজিবি সদস্যরা কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানাগেছে। অপরদিকে জংগলবাড়ি ও লামাকাটা এলাকা দিয়ে সোর্স লেংড়া জামাল প্রতিদিন একই ভাবে কয়লা, মাদক,অস্ত্র ও গরু পাঁচার করছে।
এব্যাপারে বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানান- সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয় দিয়ে রমজান মিয়া,শফিকুল ইসালাম ভৈরব,বাবুল মিয়া,শহিদুল্লা,খোকন মিয়া,জসিম মিয়া,হারুন মিয়া,জানু মিয়া,ইয়াবা কালাম,জিয়াউর রহমান জিয়া,লেংড়া বাবুল ও লেংড়া জামাল প্রতিদিন সকাল ৬টায় শতশত লোক নিয়ে ভারতের ভিতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। পরে প্লাস্টিকের বস্তায় কয়লা ভর্তি করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাটাতারের বেড়া সংলগ্ন জংগল ও ঝোপের ভিতরে লুকিয়ে রেখে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসে। সন্ধ্যার সময় সেই অবৈধ কয়লা আবার বাংলাদেশের ভিতরে এনে এলাকার বিভিন্ন বাড়িঘর ও পানিতে লুকিয়ে রাখে। এবং রাত গভীর হলে পৃথক পৃথক স্থানে পৃথক নৌকায় অবৈধ মালামাল বোঝাই করে। কিন্তু কয়লা পাচাঁর ও নৌকা বোঝাই করার সময়ে চোরাচালানী ও সোর্সদের ধারে কাছে কখনোই আসেনা বিজিবি। তবে উপরের চাপ সামলানোর জন্য মাঝে মধ্যে আংশিক কয়লা জব্দ করে কিন্তু সোর্সদের গ্রেফতার করেনা। এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার শাহালাম বলেন-এব্যাপারে আমাদের বিজিবি অধিনায়কের (সিও) সাথে কথা বলুন।
সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলমের সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করার পর রিসিভ না করার কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।