ঢাকা (সকাল ১১:০২) রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সান্তাহারে রমরমা ট্রেনের অনলাইন টিকিটের কালোবাজারী

বগুড়া জেলা ২৪৮২ বার পঠিত

মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদিঘী, বগুড়া মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদিঘী, বগুড়া Clock শনিবার রাত ০৯:০২, ২৯ আগস্ট, ২০২০

বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত জংশন স্টেশন সান্তাহারে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে। আদমদীঘি, সান্তাহার ও নওগাঁ জেলার একটি বড় অংশের মানুষের ট্রেন যাত্রার কেন্দ্রস্থল সান্তাহার জংশন স্টেশন। কিন্তু সান্তাহার জংশন স্টেশনে ট্রেনের অনলাইন টিকিট যেন সোনার হরিণ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ করোনা সংক্রমণ এবং কালোবাজারি প্রতিরোধে কাউন্টারের পরিবর্তে অনলাইনে টিকিট প্রদান শুরু করেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি তার ভোটার আইডির মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট বুক দিয়ে প্রিন্ট করে নিবেন। কোনো সৌভাগ্যবান ব্যক্তি টিকিট নিজে বুক দিতে পারলেও তার নিজের প্রিন্টার না থাকলে তাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সুযোগ পেলে টিকিট প্রিন্টের জন্য ১০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে নেয় কোন কোন দোকানী।  কিন্তু অধিকাংশ যাত্রীই অনলাইনে টিকিট কাটার প্রক্রিয়া জানেন না। ফলে টিকিট কালোবাজারিদের এখন পোয়াবারো অবস্থা। স্টেশন রোডের দোকানে দোকানে মিলছে ট্রেনের অনলাইন টিকিট। আর এসব দোকানেও কাউন্টারের মতই ভিড় থাকে।
জানা গেছে, অনলাইন টিকিট কোনো দোকানে বিক্রির বিধান না থাকলেও সান্তাহার জংশন স্টেশনের রেলওয়ে লেভেলক্রসিং থেকে টিকিট ঘর পর্যন্ত বেশ কিছু দোকানে রঙিন ডিজিটাল ব্যানার টাঙিয়ে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। রেলওয়ের টিকিট কাউন্টারে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রির করার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা নিয়োগ করা আছে। বর্তমানে তাদের পরিবর্তে অনলাইন টিকিট বিক্রি হলেও টিকিটে সেই সংস্থার লোগো ব্যবহার হচ্ছে। অর্থাৎ টিকিটের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই রয়েছে। টিকিট ছাড়ার পূর্বেই সেই সংস্থার কর্মচারিরা দোকানিদের জানিয়ে দেয়। দোকানিরা সে টিকিটগুলো এক সাথে সরিয়ে ফেলে।
ফলে সাধারণ যাত্রী তো দূরের কথা সচেতন কোন যাত্রী অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করলে দেখতে পায় টিকিট সংখ্যা-০। বাধ্য হয়ে তারাও ছুটে আসেন দোকানে। কিন্তু সেখানে এসেও টিকিট নাই জবাব পেয়ে হতাশ হয়ে পরেন। এ সময় আশপাশে থাকা দালালরা ছুটে আসে “সহযোগিতা” করতে। তারা নির্ধারিত দামের দুইগুন বা চাহিদার ভিত্তিতে ৩/৪ গুন বেশী দাম আদায় করে। এভাবে তারা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি ট্রেনের জন্য বরাদ্দকৃত টিকিটের ৫০ ভাগ টিকিট বিক্রি করছে। বর্তমানে সান্তাহার জংশন হয়ে ঢাকাগামী ৪ আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এ ছাড়া খুলনাগামী একটি ট্রেনও রয়েছে। ঢাকাগামী ৪ ট্রেনের জন্য সব শ্রেণির বরাদ্দকৃত টিকিটের সংখ্যা ৭৯২টি। বর্তমানে অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে অর্ধেক তথা ৪৪৬ টি টিকিট। এই বিপুল সংখ্যক টিকিট ভাগা বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বিক্রেতারা এবং মূল্য আদায় করছেন তাদের ইচ্ছামত।
সান্তাহার স্টেশনের খুলনাগামী যাত্রী জি,আর,এম শাজাহান সাড়ে ৬ শত টাকা দামের দুই টিকিট কিনতে বাধ্য হয়েছেন ১ হাজার ৭ শত টাকায়। একই ভাবে ঢাকাগামী ট্রেন যাত্রী রোকোনুজ্জামান জানান, তিনি তার আত্মীয়ের জন্য বার্থ শ্রেণির এক হাজার ৭০২ টাকার টিকিট কিনতে বাধ্য হয়েছেন ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। এভাবে প্রতিদিন শত শত যাত্রী দুইগুন থেকে তিন/চারগুন বেশী দাম দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার একই আসনের টিকিট ৪/৫ দোকান থেকে বিক্রি করা এবং সেই টিকিট নিয়ে ট্রেনে উঠে যাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
অপর দিকে এসব দোকানীরা টিকিট বিক্রিতে অতিরিক্ত মুনাফার কারনে তাদের মূল ব্যবসা বন্ধ রাখে অনেক সময়। গ্রাহক তাদের প্রয়োজনের মুহুর্তে সেসব দোকানে গেলে এখন হবে না বা জিনিসটা নাই বলে গ্রাহককে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এক্ষেত্রেও সাধারণ গ্রাহক তাদের প্রয়োজনীয় মুহুর্তে ভোগান্তি পোহাচ্ছে।



শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT