ঢাকা (রাত ৪:৫৪) শুক্রবার, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

Join Bangladesh Navy


মা আমি মরে গেলে হাজার সন্তান তোমার পাশে দাড়াবে

সজলের কবরের পাশে দাড়িয়ে তার পরিবার

আসাদ খন্দকার আসাদ খন্দকার Clock শনিবার সন্ধ্যা ০৬:২০, ১০ আগস্ট, ২০২৪

হ্যালো সজল বাবা তুই কই আছিস? মায়ের মোবাইলের উত্তরে ছেলে সজল বলে আমি যদি শহীদ হয়ে যাই তুমি আমার লাশটি নিয়ে এসো। মোবাইলে মা ছেলের এমন কথোপকথোন চলে। পরবর্তী মহুর্তে মায়ের সাথে কথা না হওয়ায় মা ভীষন অস্থির হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে মা আর ঠিক থাকতে পারেন নি। ছেলের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন।

দিনটি ছিল সেদিন ৫ আগস্ট। সারাদেশ তখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল।

কথাটি বলছিলাম গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের সিটি ইউনিভার্সিটির প্রতিবাদী ছাত্র সজলের কথা। পুরো নাম সাজ্জাদ হোসেন সজল (২০)। উত্তাল আন্দোলনে ১ দফা দাবীতে ঝাপিয়ে পড়া প্রতিবাদী এই ছাত্র পুলিশের গুলিতে ও পুড়ে ছাই অঙ্গারে সন্ধান পাওয়া সজল।

মা শাহিনা বেগম ও বাবা খলিলুর রহমান কান্নায় মুহুর্তে মুহুর্তে মুর্ছে যাচ্ছে তারা। কোনো ক্রমেই তাদের কান্না থামানো যাচ্ছে না। এমনভাবে ছেলের লাশ দেখতে হবে তা কখনো ভাবেনি তারা।

মা শাহিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে ১ দফা দাবিতে আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়, সেই সাথে লাশ গুম করার জন্য আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। এমন হৃদয় বিদারক সেদিনের দৃশ্যের বর্ণনা দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আমার ছেলের মোবাইলে সর্বশেষ কথা হয়, মা আমি মরে গেলে হাজার সন্তান তোমার পাশে দাড়াবে। এমন উদ্ভূদ পরিস্থিতিতে মা বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ও যোগাযোগ করে।

সজলের মা আরো বলেন, আমার একমাত্র ছেলে এক মেয়ে আমরা স্বামী স্ত্রী মিলে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার জামগড়ায় জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছি। আমাদের স্বপ্ন ছিলো আমার ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবো। সে মোতাবেক তাকে ঢাকার আশুলিয়ায় সিটি ইউনিভার্সিটিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিএসসিতে ভর্তি করাই। সেখানে সে ১ম বর্ষের ২য় সেমিস্টারের ছাত্র ছিল। সারাদেশের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গিয়ে আমার ছেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমাদের স্বপ্ন সব চুরমার হয়ে গেলো।

ঘটনার ২দিন পর গেলো মঙ্গলবার যখন লাশ নেওয়া হয় তখন পোড়া লাশের সাথে সিটি ইউনিভার্সিটির আইডি কার্ড দেখে সনাক্ত করি। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল স্যালুট জানিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে জানাযার পর লাশ হস্তান্তর করে। সনাক্তের একদিন পর আমার ছেলের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি। গেলো বুধবার গ্রামের বাড়িতে আমার ছেলের লাশ নিয়ে এসে দাফন করা হয়।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT