ঢাকা (বিকাল ৫:১২) শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

Join Bangladesh Navy


বড়লেখায় বাড়তি বিলের চাপে দিশেহারা গ্রাহক,মিলছেনা কোন সুরাহা

ইবাদুর রহমান জাকির ইবাদুর রহমান জাকির Clock রবিবার দুপুর ০৩:২৮, ৪ জুলাই, ২০২১

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায় করছে পল্লী বিদ্যুৎ। করোনাকালে বাড়তি বিলের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক (বড়লেখা) কার্যালয়ে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না তারা। উল্টো তারা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এতে গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, লকডাউনের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় করছে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন।

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে কথা জানা গেছে, গেল কয়েকমাস থেকে বড়লেখা পল্লী বিদ্যুৎ (সমিতি) কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, মিটারে রিডিংয়ে ইউনিট কম থাকলেও তাদের বিলের কাগজের সঙ্গে তা মিলছে না। রিডাররা যথাযথভাবে মিটার না দেখে মনগড়া বিল তৈরি করছেন। তাদের গাফিলতির কারণে তাদের অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে। করোনাকালে অতিরিক্ত বিল সাধারণ গ্রাহকদের পক্ষে পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযোগ করেও তারা কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না। উল্টো তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে তারা অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করছেন।

বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার বাসিন্দা পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক শাহরিয়ার ফাহিম বলেন, প্রতিমাসে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। সে হিসেবে মে ও জুন মাস মিলে ২৮০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসার কথা। কিন্তু আমাকে দুই মাসের মিলিয়ে ৩৫৭৫ টাকা বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দুইমাসে আমাকে প্রায় ৭৭৫ টাকা বাড়তি বিল দেওয়া হয়েছে। এর আগেও কয়েকবার বেশি বিল দেওয়া হয়েছিল। আমরা মতো এভাবে অনেক গ্রাহককে বাড়তি বিল দেওয়া হয়েছে। অনেকেই বিদ্যুৎ অফিসে বলেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না। প্রতিবার কেন বাড়তি বিল দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। নাকি পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ইচ্ছে করেই বাড়তি বিল আদায় করছে?

উপজেলার বিওসি কেছরিগুল গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী আব্দুর রুপ বলেন, আমার বাড়িতে দুটি কক্ষে বাতি ও একটি কক্ষে ফ্যান চলে। প্রতিমাসে আমার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। সে হিসেবে এবারও একই রকম বিল আসার কথা। কিন্তু আমাকে বিল দেওয়া হয়েছে ১৬৭০ টাকা। পরে আমার এক আত্মীয় পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা সমাধান করে তার কাছ থেকে ৩০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল রেখেছে।

বড়লেখা পৌরসভার হাটবন্দ এলাকার বাসিন্দা কেফায়েত উল্লাহ বলেন, প্রত্যেক মাসে আমি কত ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছি তা রিডাররা তোলার পর জেনে রাখি। প্রতিমাসে আমার বিল ১৩০০ বা ১৪০০ টাকা আসে। জুন মাসে আমার মিটার রিডিং অনুযায়ী আমি ১২০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছি। সে হিসেবে ১৩০০ বা ১৪০০ টাকা আসার কথা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আমার বিল এসেছে ১৭৫ ইউনিটের। পরে অবশ্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিস আমার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছে। কিন্তু প্রায় এভাবে বাড়তি বিল দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

উপজেলার ভাটাউচি গ্রামের বাসিন্দা মুজিব রাজা চৌধুরী বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ প্রায় বাড়তি বিল দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। তাছাড়া উপজেলার পরগনাহী দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোঃ মিছবাহ উদ্দিন জানান মাদ্রাসা বন্দ অথচ মনগড়া বিল তৈরী করছে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ।এপ্রিলে ৩২০০, মে মাসে ৪২০০ ও জুন মাসে ৪২৩১ টাকার বিল। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আমাদের এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় করেছে। লাইন কেটে ফেলার ভয়ে মানুষজন বিল দিতে বাধ্য হয়েছেন। অভিযোগ দিতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কল করেছি। কিন্তু তারা রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এমাজ উদ্দিন সরদার মুঠোফোনে বলেন, কারও কারও কিছু বিল একটু বেশি এসেছে। আমাদের কার্যালয়ে যারা অভিযোগ করছেন, তাদের সমস্যা আমরা সমাধান করে দিচ্ছি। এরপরও কারও সমস্যা থাকলে আমাদের কার্যালয়ে এলে আমরা সমাধান করে দেব।

লকডাউনের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, জুন ক্লোজিংয়ের কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ বিল আদায় করা হয়েছে। কারণ করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছে। এজন্য গ্রাহকরা বিদ্যুৎ অফিসে এসে বিল দিতে পারছেন না। তাই পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ আদায় করা হয়েছে।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT